পাবনায় কলেজ কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি–জামায়াত বিরোধ, পাল্টাপাল্টি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর

পাবনার আটঘরিয়ায় একটি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য পদ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষ একে অপরের ওপর হামলা, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে। দলের কার্যালয় ও পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অভিযোগ তুলে আজ শুক্রবার সকালে জামায়াতের নেতা–কর্মীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ করেছেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য পদের জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র তোলার শেষ দিন ছিল। দুপুরে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আছিম উদ্দিনসহ বিএনপির তিনজন মনোনয়নপত্র নেন। এর কিছুক্ষণ পর জামায়াতের উপজেলা আমির নাকিবুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন কলেজে গিয়ে মনোনয়নপত্র চান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ করে। কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও দুই পক্ষের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পরিবেশ স্বাভাবিক হয়। তবে আজ সকালে জামায়াতের নেতা–কর্মীরা আবার জড়ো হন। তাঁরা উপজেলার দেবোত্তর বাজার এলাকায় উপজেলা জামায়াতের কার্যালয় ও পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভে জামায়াত নেতা–কর্মীরা পোড়া কোরআন প্রদর্শন করেন। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ শেষে পাবনা-চাটমোহর সড়ক আটকে পথসভা করেন দলটির নেতা–কর্মীরা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব মন্ডল, সহকারী সেক্রেটারি এস এম সোহেল, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. নকিবুল্লাহ প্রমুখ। নাকিবুল্লাহ অভিযোগ করেন, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য পদে ফরম তুলতে গেলে বিএনপির নেতারা তাঁদের বাধা দিয়েছেন। একজনকে মারপিট করেছেন। পরে তাঁদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছেন। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান।

জেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব মন্ডল বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির চাঁদাবাজ ও দখলবাজ সন্ত্রাসীরা শুধু জামায়াতের কার্যালয় পোড়ায়নি, তারা ইসরায়েলি কায়দায় বর্বর হামলা চালিয়ে পবিত্র কোরআন, হাদিসসহ বিভিন্ন ইসলামি বইপত্র পুড়িয়েছে।’
জামায়াত নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাল্টা অভিযোগ তোলেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কারও ফরম তুলতে বাধা দিইনি ও অফিস ভাঙচুর করিনি। জামায়াত নেতা-কর্মীরাই অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে।’

দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, অভিভাবক সদস্য পদে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তবে জামায়াতের কেউ মনোনয়নপত্র নেননি। কলেজের বাইরে কিছু ঝামেলা হয়েছে। তবে কী নিয়ে তা, তাঁর জানা নেই।

স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের উত্তেজনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুজ্জামান বলেন, দুই পক্ষেরই কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।