সড়কের পাশে পড়ে ছিলেন হাত-পা বাঁধা এক নারী

বরিশালে মহাসড়কের পাশে পলিথিনে মোড়ানো হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নারীকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের পাশে পলিথিনে মোড়ানো এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক নারীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারীকে (২৩) আজ রোববার ভোরে পুলিশ সদর উপজেলার তালুকদারহাট এলাকায় সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে। পরে তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তালুকদারহাট এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েকজন ভোরে বাজারের দোকানে যাওয়ার পথে সড়কের পাশে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় এক নারীকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। পরে তাঁরা বন্দর থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে ওই নারী বলেন, তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরের বাবার বাড়ি থেকে ভোলায় তাঁর স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন। এ জন্য তিনি সদর উপজেলার লাহারহাট ঘাটে যান। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় কোনো নৌযান না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবার বরিশালে বাবার বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তিন-চারজন এসে তাঁকে ধরে হাত–পা ও চোখ–মুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাঁর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য ওষুধ খাওয়ানো হয়। এ ছাড়া তাঁর হাতে-পায়ে তরলজাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি জ্ঞান হারান। আজ ভোরে হাত-পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় তাঁকে পুলিশ সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। স্বামীর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ভাইয়েরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন তিনি।

পুলিশ জানায়, ওই নারীর শ্বশুরবাড়ি উজিরপুরে হলেও তাঁর স্বামী ভোলায় ব্যবসা করেন। তাঁর স্বামীর আরেকটি বিয়ে রয়েছে। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক এস ‍এম মনিরুজ্জামান জানান, ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই নারীর ভাই বলেন, ‘আমরা খবর শুনে হাসপাতালে এসে বোনকে পেয়েছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, আমরা এখনো জানি না।’

বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর হাতে ও পায়ে দুটি ফোসকার মতো রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো দার্হ্য পদার্থ ছুড়ে মারায় এ ধরনের ফোসকা পড়েছে। তবে সেগুলো গুরুতর নয়। তবে চিকিৎসাধীন থাকায় এখনো বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ সম্ভব হয়নি।

ওসি আরও বলেন, স্বামীর আগের স্ত্রীর ভাইয়েরা তাঁকে মারধর করেছেন বলে ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তবে এ ঘটনায় কেউ মামলা করেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগও করেনি।