ফরিদপুরে সৎছেলেকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে বাবার জবানবন্দি

মিজানুর রহমানকে গত রোববার মাগুরা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের মধুখালীতে সৎছেলেকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। গতকাল সোমবার ফরিদপুরের ৫ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ফরিদউদ্দীন তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আজ মঙ্গলবার পিবিআই ফরিদপুর কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর মধুখালী উপজেলার গোন্ধারদিয়া এলাকায় চন্দনা নদীর পাড় থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই ছেলের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ওই পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, লাশটি ছিল মধুখালী উপজেলার আশাপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল শেখ ও ইতি খাতুনের সন্তান মুরসালিনের (১১)। পিবিআই বলছে, ২০২২ সালের ২৩ জুন মুরসালিনকে হত্যা করে একটি সাদা বস্তায় ভরে লাশ ফেলে দেন তার সৎবাবা মো. মিজানুর রহমান।

শিশু মুরসালিন
ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনায় মধুখালী থানার উপপরিদর্শক সৈয়দ তোফাজ্জেল হোসেন বাদী হয়ে মধুখালী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন ও পরে একই থানার এসআই মো. মাসুদ রানা তদন্ত করেন। হত্যার রহস্যের জট না খোলায় মামলা পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়।

মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ফরিদপুর কার্যালয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) রামপ্রসাদ ঘোষ বলেন, নদীর পাড়ে পাওয়া হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে তদন্তে পাওয়া যায় ছেলেটির সৎবাবা মিজানুর তাকে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে ফেলে দেন। এ ঘটনায় আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় গত রোববার মাগুরার ওয়াবদা মোড় থেকে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গতকাল মিজানুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে মিজানুর রহমান উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২৩ জুন দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি বেগমের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। ইতি কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। মা কোথায় গেছে জানতে চাইলে মুরসালিন বলে সে জানে না। কয়েকবার বলার পর মুরসালিন না বলায় মিজানুর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে থাপ্পড় দেন। এর ফলে কানের পর্দা ফেটে গিয়ে মুরসালিনের মৃত্যু হয়।

জবানবন্দি অনুযায়ী মিজানুর লাশ বাড়ির পাশের একটি মরিচখেতে লুকিয়ে রাখেন। পরে রাত ১২টার পর বাড়ি থেকে আনা বস্তায় মৃতদেহ তুলে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে মথুরাপুর এলাকায় চন্দনা নদীতে ফেলে দেন। এর ছয় মাস পর মধুখালীর গোন্ধারদিয়া এলাকায় চন্দনা নদী থেকে কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।