কুমিল্লায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলার অভিযোগ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে গুলি ছুড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে ওই ইউনিয়নের গৈয়ারভাঙা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় দুজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ শরিফ বলেন, ‘একজনের পায়ে ও হাতে এবং আরেকজনের মাথায় ছররা গুলি লেগেছে। ওরা এখন আশঙ্কামুক্ত।’
হামলার সময় উন্দানিয়া গ্রামে বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, আজ বেলা তিনটায় উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলামের বাড়িতে কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরীর। বেলা দুইটার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াতউল্লাহর নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মী গৈয়ারভাঙা বাজারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, গৈয়ারভাঙা বাজারে মিছিল করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উন্দানিয়া গ্রামে গিয়ে বিএনপির সভাস্থলের মঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন এবং বিএনপির নেতা মফিজুল ইসলামের বাড়িতে লুটপাট চালান। এ সময় আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি করে পালাতে থাকেন। একপর্যায়ে অস্ত্রধারীরা গুলি চালায়। এতে মনির হোসেন নামের বিএনপির এক কর্মীর মাথায় গুলি লাগে। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহমেদ খানের পায়ে ও পেটে গুলি লাগে। এ ছাড়া অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধসহ আহত নেতা-কর্মীদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী তাঁদের দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর ভাতিজা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (শাহীন) আয়াতউল্লাহর নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়। আমরা কি কর্মিসভাও করতে পারব না। আগেও বাকই উত্তর ইউনিয়নে আমার কর্মিসভা ভন্ডুল করা হয়েছে। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়।’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির লোকজন আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করেছে। আমাদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের নাম পরে জানানো হবে। আমরা কোনো হামলা করিনি।’
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সরকার প্রথম আলো বলেন, বেলঘর উত্তর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লোকজনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে।