বগুড়ায় সংঘর্ষের মামলায় বিএনপির আরও ৪ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার, রিমান্ডে দুই নেতা

পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের খবরে ঘটনাস্থলে আসেন যুবলীগের নেতা–কর্মীরা। এ সময় তাঁদের ঠেকান পুলিশ সদস্যরা। গত মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড় এলাকায়ছবি: সোয়েল রানা

বগুড়ায় পদযাত্রা কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন উপজেলা থেকে নতুন করে আরও চার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাতে সদর ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা থেকে দুজন এবং শাজাহানপুর উপজেলা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে পৃথক তিন মামলায় গ্রেপ্তার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমানকে এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহার আদালতে পুলিশ তিন দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বগুড়া আদালতের পরিদর্শক অশোক কুমার সিংহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান বলেন, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, সরকারি কাজে বাধা, ভাঙচুর ও ককটেল হামলার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনসহ বিভিন্ন ধারায় সদর থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গতকাল দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ নতুন করে শহরের জামিলনগর এলাকার বাসা থেকে শহর ছাত্রদলের কর্মী রিবন হাসান ওরফে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিএনপির পদযাত্রা থেকে ফেরার পথে দূরপাল্লার বাস ভাঙচুরের অভিযোগে আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবদুল মুহিত তালুকদারসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের চালক মো. ফেরদাউস। মামলার দুই আসামিকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ নতুন করে আদমদীঘি উপজেলার শালগ্রামের বাসিন্দা রেজাউল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুন

শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, বগুড়ায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে শাজাহানপুর উপজেলা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল আজাদ (৫০) ও থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আরমান মন্ডল (৩৮)।

এদিকে পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে মামলার পর জেলাজুড়ে পুলিশি ধরপাকড়ের অভিযোগ করেছে বিএনপি। বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, মামলার পর থেকে পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে। অনেককে অজ্ঞাতনামা আসামি করায় গ্রেপ্তারের আতঙ্কে নেতা-কর্মীরা বাড়িছাড়া।

আরও পড়ুন

জেলা বিএনপির সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বলেন, মঙ্গলবারের পদযাত্রা কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পর এখন পর্যন্ত চারটি ‘গায়েবি’ মামলায় ২১১ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১১ জনকে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে বহু নেতা-কর্মীকে। মামলার পর নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে বহু নেতা-কর্মী এলাকাছাড়া। তবে ধরপাকড় চালিয়ে নেতা-কর্মীদের মনোবল ভাঙা যাবে না। এক দফা দাবি আদায়ে নেতা-কর্মীরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মঙ্গলবার বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত। বেলা পৌনে একটার দিকে শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মোড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ মুহুর্মুহু কাঁদানে গ্যাসের শেল, শটগানের গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলি ও হামলায় অন্তত ২০০ নেতা-কর্মী আহত হন বলে বিএনপির দাবি। এর মধ্যে ৭০ জন গুলিবিদ্ধ। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, বিএনপির হামলায় ৬ থেকে ১১ পুলিশ সদস্য আহত হন। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে।

আরও পড়ুন