ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া চিকিৎসকের ২ বছরের কারাদণ্ড, ক্লিনিক সিলগালা

ভুয়া চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও ভারতীয় চিকিৎসক পরিচয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে এক ব্যক্তিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তাঁর নাম শরিফুল ইসলাম। তিনি আমাদের হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি ক্লিনিকে রোগী দেখতেন। ওই ক্লিনিকও সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার ওই ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভুয়া চিকিৎসক শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

শরিফুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় হলেও তাঁর ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে।

ওই ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, শরিফুল ইসলামের নামফলকে লেখা রয়েছে ‘এমবিবিএস (রাজীব গান্ধী স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত), এমডি (ইন্টারনাল মেডিসিন), ডিএম (নিউরো সুপার স্পেশালিস্ট), রিসার্চ (রাজীব গান্ধী স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত)’। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, শরিফুল ইসলামের সব সনদ ভুয়া। আসলে তিনি এসএসসি পাসও করেননি।

স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, শরিফুল ইসলাম নিজেকে ভারতের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে আমাদের হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখে আসছিলেন। সন্দেহ হলে তাঁরা বিষয়টি সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জানান।

অভিযোগ পেয়ে আজ ঠাকুরগাঁওয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামছুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইফতেখায়রুল ইসলাম সেখানে অনুসন্ধানে যান। এ সময় দেখা যায়, শরিফুল ইসলামের সব সনদ ভুয়া।

ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইফতেখায়রুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, শরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ভারতীয় চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে শহরের একটি ক্লিনিকে রোগী দেখে আসছেন। এর আগেও আমরা এখানে দুইবার অভিযানে এসে তাঁকে পাইনি। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবার অভিযান চালানো হয়। এ সময় আমরা যাচাই করে দেখেছি, শরিফুল ইসলামের সব সনদ ভুয়া। বাংলাদেশের বিএমডিসির নম্বরের মতো ভারতীয় চিকিৎসকেরও একটি নম্বর থাকে, সেটাও ভুয়া। তিনি এসএসসি পরীক্ষাও দেননি। তাঁর ভারতীয় পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। তিনি মূলত বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাসিন্দা।’

ইফতেখায়রুল ইসলাম আরও বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন শরিফুল ইসলাম। তাঁকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।