দাকোপে উপজেলা চেয়ারম্যানকে মারতে তেড়ে যান আ.লীগ সভাপতি

খুলনা জেলার মানচিত্র

দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল হোসেন ওই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনসুর আলী খানকে মারতে তেড়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খুলনার দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার সুতারখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে আজ শুক্রবার উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দাকোপ থানায় আলাদা অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সুতারখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় মনসুর আলী খানকে ‘রাজাকার’ বলে কটূক্তি করেন আবুল হোসেন। এরপর আবুল হোসেনকে ‘রাজাকারপুত্র’ বলেন মনসুর আলী খান। এর একপর্যায়ে মনসুর আলী খানকে মারতে তেড়ে যান আবুল হোসেন। এ সময় সভায় থাকা অন্য নেতারা তাঁদের নিবৃত করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দাকোপে আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখনো দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন এবং অন্য পক্ষের নেতৃত্বে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ননী গোপাল মণ্ডল। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মনসুর আলী খান হলেন ননী গোপাল মণ্ডলের অনুসারী। উপজেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলন উপলক্ষে দলের নেতারা ইউনিয়নে ইউনিয়নে গিয়ে বর্ধিত সভা করছেন। দুটি পক্ষের নেতারা এসব সভায় অংশ নিচ্ছেন।

গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনসুর আলী খানের কাছে পরাজিত হন আবুল হোসেন। এ বিষয়ে মনসুর আলী খানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি তো মিথ্যা কথা বলেন। ওখানে তেমন কিছুই হয়নি। সম্পূর্ণ বিছিন্ন ঘটনা। উনি থানায় অভিযোগ করেছেন, আমিও থানায় অভিযোগ করেছি। আর স্থানীয়ভাবে ওটা মিটমাট হয়ে গেছে। এরপর আরও দুটো ইউনিয়নে আমরা প্রোগ্রাম করেছি। সেখানে তো আমরা দুজনই ছিলাম। সব ঠিক হয়ে গেছে।’

দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল কুমার দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ দুটি অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেব।’

থানায় করা অভিযোগে মনসুর আলী খান উল্লেখ করেন, নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে আবুল হোসেন তাঁর নামে মানহানিকর নানা অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন। গতকাল রাতে সুতারখালী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন মনসুর আলী খান। অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় আবুল হোসেন বাধা দিয়ে বিশৃঙ্খলা করতে থাকেন। তিনি তাঁকে বাধা দিতে নিষেধ করেন। এ সময় আবুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাঁর মুখে ঘুষি মারতে তেড়ে আসেন। আশপাশের লোকজন ও মঞ্চে উপস্থিত নেতা–কর্মীরা তাঁকে রক্ষা করেন। এর পর থেকে আবুল হোসেন তাঁকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।