ম্রোদের অভয় দিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বললেন, লুটপাটকারীরা রক্ষা পাবে না

বান্দরবানের লামার সরইয়ে রেংয়েনপাড়ায় ম্রো ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার বিকেলে
ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের লামা সরইয়ের রেংয়েনপাড়া পরিদর্শন করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ। এ সময় হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার ম্রোদের অভয় দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘নির্ভয়ে বসবাস করেন। যারা অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে অপরাধ করেছে, তারা কখনো প্রশ্রয় এবং রক্ষা পাবে না। যথাযথ সরকারি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপনাদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করা হবে।’

মঙ্গলবার বিকেলে কমিশনের সদস্যদের নিয়ে রেংয়েনপাড়া পরিদর্শনে যান কামাল উদ্দিন। তাঁরা সেখানে হামলাকারীদের অগ্নিসংযোগে পুড়ে যাওয়া ও ভাঙচুর হওয়া দরিদ্র ম্রোদের ঘরবাড়ি ঘুরে দেখেন। এ সময় ম্রোরাও তাঁদের পাড়ায় হামলার ঘটনা এবং কীভাবে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছেন, তা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন

ঘটনার শিকার ম্রোরা লামার রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কোম্পানির লোকজনকে পাড়ায় হামলার জন্য দায়ী করেন। পাড়া উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য ১ জানুয়ারি গভীর রাতে পাড়ায় হামলা, চারটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, কয়েকটিতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে পাড়াবাসী অভিযোগ করে আসছেন।

লামা সরই ভূমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক রংধজন ত্রিপুরা ওই এলাকার তিনটি ম্রো ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীর পক্ষে কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে একটি স্মারলিপি দেন। এতে তিনি গত বছরের ২৬ এপ্রিল থেকে রেংয়েনপাড়া, লাংকমপাড়া ও জয়চন্দ্রপাড়ার জুমচাষের বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা থেকে নিপীড়নমূলক ঘটনা তুলে ধরেন। এসব ঘটনায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিকে দায়ী করে সুবিচার দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন

লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জাবেদ ওই এলাকার ভূমি সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, ম্রো ও ত্রিপুরারা প্রথাগতভাবে জুমচাষ করেন। তাঁরা বন্দোবস্ত নিতে অভ্যস্ত নন। ম্রো ও ত্রিপুরা যে জমি দাবি করেন, লামা রাবার কোম্পানিরও দাবি, সেটি তাদের ইজারা জমি। এ জন্য ভূমি বিবাদকে কেন্দ্র করে সমস্যা হচ্ছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান ম্রো, ত্রিপুরা ও জনপ্রতিনিধিদের কথা শোনার পর বলেন, দরিদ্র ম্রোরা হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছেন, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ম্রোদের পাল্টা কিছু না করে পালিয়ে আত্মরক্ষার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, অপরাধী যে–ই হোক, কেউ রেহাই পাবে না।

পরিদর্শনের সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, সদস্য কংজরী চৌধুরী, কাউছার আহমেদ প্রমুখ ছিলেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জাবেদ, লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মারমা ও স্থানীয় সরই ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিচ।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন