চট্টগ্রামে বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে চালের দাম

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বাজারে চালের আড়তে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে নানা ধরনের চালফাইল ছবি

চট্টগ্রামের বাজারে রোজার মধ্যেই বেড়েছে চালের দাম। চাল ভেদে বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে দাম। এতে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। এর আগে জানুয়ারি মাসেও দাম বেড়েছিল চালের। ফেব্রুয়ারি মাসে দাম কমে এলেও মার্চে দাম আবার বেড়েছে।

ব্যবসায়ী ও চালকলের মালিকেরা বলছেন, মোকামে ধানের দাম বেড়েছে। ফলে চালকলগুলোতে খরচ বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে বাজারে প্রতি মণ ধানের (মোটা) দাম ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা। আর চিকন ধানের দাম ছিল ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। বর্তমানে প্রতি মণ ধানের দাম বেড়েছে অন্তত ১০০ টাকা। ফলে চালের ক্ষেত্রে তা প্রভাব ফেলছে।  

চট্টগ্রামের চালের আড়ত নগরের পাহাড়তলী ও চাক্তাই এলাকায়। এ ছাড়া নগরের বহদ্দারহাট বাজারেও রয়েছে কিছু আড়ত। তবে চট্টগ্রামের অধিকাংশ চালকল চাক্তাই এলাকায় অবস্থিত। এই দুই আড়ত থেকে চট্টগ্রামের অন্যান্য বাজারে চাল সরবরাহ করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার এই দুই আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে সেদ্ধ চাল ভেদে বস্তাপ্রতি প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া আতপে বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। বৃহস্পতিবার চাক্তাই ও পাহাড়তলী এলাকায় গুটি স্বর্ণা চালের প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ২ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৪৯ টাকা। তবে এক সপ্তাহ আগেও এই চাল বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার ৩০০ টাকায়। এ ছাড়া স্বর্ণা-৫ প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই চাল প্রতি কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মিনিকেট (সেদ্ধ) প্রতি কেজি ৫৪ টাকা, মিনিকেট (আতপ) ৫৮, পাইজাম (আতপ) ৫৪, পাইজাম (সেদ্ধ) ৫২ ও জিরাশাইল ৬৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব চালে এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে দুই থেকে চার টাকা। পাইকারিতে এই দামে চাল বিক্রি হলেও খুচরায় তার চেয়ে ২ থেকে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মোকামে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়েছে সব চালের। চাল ভেদে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে দাম।

চাক্তাই এলাকার চালকলের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধান ভেদে প্রতি ১০০ কেজিতে ৬৪ থেকে ৬৮ কেজি চাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে মোটা চালের ক্ষেত্রে খরচ পড়ে প্রতি কেজি অন্তত ৪৬ টাকা ও চিকন চালের ক্ষেত্রে অন্তত ৫৫ টাকা। এর সঙ্গে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ যোগ হয়।

চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, চালের ক্ষেত্রে প্রধান কাঁচামাল ধান। ধানের দাম বাড়লে চালের দামে প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া বর্তমানে ধান থেকে চাল উৎপাদনের খরচও বেড়েছে। বর্তমানে পরিবহন খরচও বাড়তি।