বদরগঞ্জে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, গুলি ছুড়ল পুলিশ

বদরগঞ্জের শাহেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। এখানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শাহেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।

আজ রোববার ভোট গ্রহণের শেষ মুহূর্তে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে নৌকার সমর্থকেরা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনের ওই ভোটকেন্দ্রটি নৌকার প্রার্থী ও টানা দুবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরীর নিজের ইউনিয়নে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভোট গ্রহণের শেষ মুহূর্তে বিকেল পৌনে চারটার দিকে নৌকার প্রার্থী আহসানুল হক ওরফে ডিউক চৌধুরীর স্ত্রী সুরভী চৌধুরী কিছু সমর্থক নিয়ে ওই ভোটকেন্দ্রের ভেতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। এ সময় সুরভী চৌধুরী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে একা কথা বলবেন বলে জানান। এতে বাদ সাধেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকারের নির্বাচনী এজেন্টরা। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানও সংসদ সদস্যের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে আপত্তি জানান।

এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে নৌকার সমর্থকেরা কেন্দ্র থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে টহলে থাকা রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু আশরাফ সিদ্দিকীসহ পুলিশের একটি দল গাড়িসহ সেখানে পৌঁছালে নৌকার সমর্থকেরা পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত তিন ব্যক্তিকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাকির মোবাশ্বির জানান, গুরুতর আহত মহুবুল ইসলাম, খাজানুর রহমান ও আব্দুর রহিম নামের তিন ব্যক্তিকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের পিঠে ছররা গুলির চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই ভোটকেন্দ্রের নৌকা প্রতীকের এজেন্ট আবুল হোসেন বলেন, সংসদ সদস্যের স্ত্রী সুরভী চৌধুরী ভোটকেন্দ্রের ভেতরে এলে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে গুলি ছোড়ে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, কতিপয় ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রে ঢুকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত হলে পুলিশের ওপরেও হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয়। বাধ্য হয়ে শটগান থেকে ফাঁকা গুলি করা হয়। কেউ পুলিশের গুলিতে আহত হয়নি। আহতরা দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে পড়ে আহত হতে পারেন।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এমপির স্ত্রীসহ কতিপয় ব্যক্তি বিকেল পৌনে চারটার দিকে ভোটকেন্দ্রে আসেন। এরপর কিছু ছেলেপেলে ভোটকেন্দ্র থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পরিস্থিতি শান্ত হলে কেন্দ্রের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।’