রূপগঞ্জে যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কিছু বাড়িঘরও ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কলিঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তওহীদুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস টি সাত্তারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। তওহীদুল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার এবং এস টি সাত্তার নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীরের পক্ষে নির্বাচন করেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তীব্র হয়। নির্বাচনের পর পক্ষ দুটির মধ্যে কয়েকবার সংঘর্ষেরও ঘটনা ঘটে। এর জেরেই শনিবারের এ সংঘর্ষ হয়।
তওহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। এর জেরে নির্বাচনের পর একাধিকবার তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। শনিবার সাত্তার এবং ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীমের লোকজন বিনা উসকানিতে তাঁর বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। পরে তাঁর লোকজন হামলায় বাধা দিতে এলে ইব্রাহীম ও সাত্তারের লোকজন আরও অন্তত ১০টি বাড়িঘরে ভাঙচুর চালান এবং তাঁর লোকজনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে তিনি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করলে এলাকায় পুলিশ আসে। হামলাকারীরা তখন পুলিশের সামনে তাঁদের বাড়িঘরে ককটেল বিস্ফোরণ ও তাঁকে উদ্দেশ্য করে গুলি চালান। বাড়িঘরে হামলার সময় হামলাকারীরা লুটপাটও করেন।
তবে সাত্তার বলেন, তওহীদুল ও তাঁর লোকজন একটি ভূমিদস্যু গ্রুপের পক্ষের হয়ে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জমি দখল করছিলেন। গত নির্বাচনের প্রচারণার সময় গোলাম দস্তগীর গাজী দাউদপুরে গণসংযোগে এসে কথা দেন, তিনি নির্বাচিত হলে দখল হওয়া সব জমি মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। নির্বাচনে গোলাম দস্তগীর বিজয়ী হওয়ার পর স্থানীয় জমির মালিকেরা নিজেদের জমি দখলে নিতে শুরু করেন। জমির দখল ধরে রাখতে তওহীদুল ভিন্ন গ্রাম থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে জমিমালিকদের ভয়ভীতি দেখান এবং তাঁদের ওপর হামলা করেন।
নৌকার পক্ষের স্থানীয় নেতা হিসেবে ইব্রাহীমের কাছে জমির মালিকেরা এলে ইব্রাহীম সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে অবস্থান নেন। এরই জেরে শনিবার তওহীদুল ৩০-৩৫টি মোটরসাইকেলে করে লোকজন নিয়ে গ্রামে ঢুকে কয়েকজন জমির মালিককে মারধর করলে ইব্রাহীমের লোকজন তাঁদের ধাওয়া দেন। এ নিয়ে সংঘর্ষ হলে কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর হয়। তবে গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ কিংবা লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি পক্ষ মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় এলে আরেক পক্ষ তাদের ধাওয়া দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ককটেল বিস্ফোরণ বা গুলির কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। রাত নয়টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।’