নিখোঁজের ১৭ ঘণ্টা পর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার লাশ উদ্ধার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফেরদৌস আলী। সোমবার তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

নিখোঁজের আনুমানিক ১৭ ঘণ্টা পর লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফেরদৌস আলীর (৪০) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সদর উপজেলার মহেন্দ্র নগরের নিজপাড়া এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বেলা একটার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের আনন্দ বাজারের গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে লালমনিরহাট সদরের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়িক কাজে রওনা হন ফেরদৌস আলী।

দীর্ঘসময় যোগযোগ না করায় রোববার বিকেল চারটার দিকে ফেরদৌস আলীর মুঠোফোনে ফোন করে তাঁর স্ত্রী আয়েশা ইসলাম। কিন্তু তিনি ফিরদৌসের ফোনটি বন্ধ পান। এ অবস্থায় ফিরদৌসের স্ত্রী স্বামীর খোঁজে লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় এলাকায় এসে উপস্থিত হন।

মিশন মোড় এলাকার একটি দোকানের সামনে স্বামী ফিরদৌসের ব্যবহার করা মোটরসাইকেলটি লক করা অবস্থায় দেখতে পান আয়েশা ইসলাম। এরপর তিনি তাঁর স্বজনদের বিষয়টি জানান। পরে সবাই মিলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাননি। গতকাল সোমবার লাশ পাওয়ার পর এই ঘটনায় ফিরদৌসের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় যে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে লালমনিরহাট সদর থানার ডিউটি অফিসারের মুঠোফোন নম্বরে ফোন করে জানানো হয়, এক ব্যক্তির লাশ লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্র নগর ইউনিয়নের নিজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে আনুমানিক ১০০ গজ দূরে রাস্তার পাশে পড়ে আছে। এ সংবাদ পেয়ে সদর থানার পুলিশ উপস্থিত হয়।

পরে পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে নিখোঁজ ব্যবসায়ী ফিরদৌস আলীর স্ত্রীসহ তাঁর স্বজনেরা সকাল সাতটার দিকে সেখানে যান এবং লাশটি ফেরদৌস আলীর বলে শনাক্ত করেন। এ সময় নিহত ফেরদৌস আলীর প্যান্টের পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ পাওয়া যায়, তবে মানিব্যাগে কোনো টাকা পাওয়া যায় নি। এ সময় ফেরদৌস আলীর কানের লতির উপরে রক্তের দাগ, দুই হাতের ওপরে ক্ষত চিহ্ন, ডান পাশের পাঁজর ও হাঁটুর নিচে জখম দেখতে পাওয়া যায়।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, গতকাল ফিরদৌস আলীর লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি ঘটনার কারণ ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তসহ তাঁদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে।

লালমনিরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম মমিনুল হক ফেরদৌস আলী খুনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ও জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।