খুলনায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

খুলনার খালিশপুরে বিএনপির কার্যালয়টি ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

খুলনা নগরের খালিশপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপির থানা ও একাধিক ওয়ার্ড কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আওয়ামী ও যুবলীগের কর্মীদের ওপর বিএনপির নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়ে আহত করেছেন বলে দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন।

শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নগরের ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম দাবি করেন, ছাত্রলীগ–যুবলীগের সদস্যরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় খালিশপুরের প্রতিটি ওয়ার্ডে তাণ্ডব চালিয়েছেন। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে অলিগলিতে, পাড়া–মহল্লায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর করেন। এ সময় বিএনপি নেতা–কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও ন্যক্কারজনক আচরণ করেন তাঁরা। ছাত্রলীগ–যুবলীগের নেতা–কর্মীরা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় খালিশপুর থানা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড কার্যালয়ে আসবাব ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডের মিছিলে হামলা চালিয়েছেন। বিএনপি নেতা–কর্মীদের কুপিয়ে–পিটিয়ে জখম করেছেন। বাস্তুহারা ইউনিট বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও বোমা হামলা করেছেন। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় অর্ধশত নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।

খালিশপুর থানা বিএনপির কার্যালয়সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড কার্যালয়ে আসবাব ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে
ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা বলেন, রাজনীতিতে সহ–অবস্থান খুলনার অতীত ঐতিহ্য ছিল; তা বিনষ্ট করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় নগরে তাণ্ডব শুরু করেছেন ছাত্রলীগ–যুবলীগের ক্যাডাররা। ভবিষ্যতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তার দায়ভার শাসক দল ও পুলিশকে বহন করতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রকিবুল ইসলাম প্রমুখ।

ঘটনার বিষয়ে খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল ইমামের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁদের শোকসভা ছিল। একই এলাকায় বিএনপির কর্মসূচি থাকায় পুলিশ তাদের কর্মসূচি করতে নিষেধ করে। তবে বিএনপি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল বের করে অশ্লীল ও উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। তারা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালায়, মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একপর্যায়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার বিকেলে বৈকালি মোড়ে পাশাপাশি জায়গায় একই সময়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কর্মসূচির আয়োজন করে। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাউকেই অনুমতি দেয়নি। দুই পক্ষকেই বুঝিয়ে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তবে কর্মসূচি পালন না করতে পেরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করার চেষ্টা করেছেন। একপর্যায়ে বিএনপির সাবেক এক ওয়ার্ড কাউন্সিলের নেতৃত্বে চিত্রালি বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা–কর্মীদের মারধর এবং তাঁদের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এতে চারজন বেশ আহত হয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আহত আওয়ামী লীগের নেতারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।