শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে ফেরত আনতে না পেরে তরুণের ‘আত্মহত্যা’

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

কয়েক মাস আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন মনির খান (২৪)। তবে মেয়ের পরিবারের লোকজন ওই বিয়ে মেনে নেননি। কৌশলে তাঁরা মেয়েকে নিয়ে যান। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও আর স্ত্রীকে ফেরত আনতে পারেননি মনির। এই দুঃখ-কষ্ট থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া একটি চিরকুটেও আত্মহত্যার এমন কারণ লিখে গেছেন মনির।

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঘোষবাগ এলাকায় ভাড়া বাড়ি থেকে গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে মনির খানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রজব আলীর ছেলে।

মনিরের চাচা রবিউল ইসলাম জানান, প্রায় দেড় মাস আগে মনির বিয়ে করেন। মেয়ের পরিবার এ বিয়ে মেনে নেয়নি। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য মনির ও তাঁর স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে যান ওই পরিবারের লোকজন। ওই রাতে তাঁরা উত্তরায় মেয়ের ভাইয়ের বাসায় ছিলেন। মেয়ের পরিবারের সদস্যরা মনিরকে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে মনিরের পরিবারের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলবেন বলে জানান। পরদিন সকালে তাঁরা মেয়েকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর মনির বিভিন্ন সময় তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর মনির আত্মহত্যা করলেন।

মনিরের মৃতদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। এতে লেখা রয়েছে, ‘আসসালামু আলাইকুম। শুরুতে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি দাদা। কারণ আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসতাম। কিন্তু আপনাকে ছেড়ে আমার চলে যাইতে হচ্ছে। যাই হোক সবাইকে মাফ করে দিতে বলবেন আল্লাহ যেন আমাকে মাফ করে দেন। বিয়ে তো মানুষ জীবনে একবার করে। যতই রাগ করি কিন্তু দিন শেষে আমার স্ত্রীর কাছে আমি শান্তি পাই। আর সেই স্ত্রীকে আমার শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে গেছে। তাই আমি বাধ্য হইলাম আমার নিজেকে শেষ করে দেওয়ার জন্য। তারা সবাই মিলে আমার স্ত্রীকে অপহরণ করেছে। এই কষ্ট সহ্য করতে পারলাম না। আমাকে সবাই ক্ষমা করে দিবেন। আর আমার লাশ দাফন করবেন আমার দাদুর কবরের পাশে। ইতি- মনির খান।’

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদরুজ জামান প্রথম আলোকে বলেন, টিনশেড একটি কক্ষে আড়ার সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচিয়ে এক তরুণ আত্মহত্যা করেছেন—এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘরের দরজা খোলাই ছিল। দরজার ভেতরের দিকের সামনের অংশে একটি হাতে লেখা চিরকুট পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।