৫০ বছরের পুরোনো এক্স-রে যন্ত্রই ভরসা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ বছরের পুরোনো এক্স-রে যন্ত্রটি এখনো রয়ে গেছে। গত সোমবার তোলা ছবিছবি: প্রথম আলো

স্বাধীনতার পর দেশের আর্থসামাজিক উন্নতির পাশাপাশি চিকিৎসাসেবায়ও বেশ পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ বছরের পুরোনো এক্স-রে যন্ত্রটি এখনো রয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাসেবায় নতুন নতুন আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত হলেও সরাইল উপজেলাবাসী বঞ্চিত রয়ে গেছেন। চার লক্ষাধিক মানুষের সরাইলে এখনো যুক্ত হয়নি নতুন এক্স-রে যন্ত্র।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বর্তমান ৫০ শয্যার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি একসময় ছিল ১০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ১৯৭৪ সালে এটিকে থানা স্বাস্থ্য প্রকল্প নামে ৩০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তখন একটি এক্স-রে যন্ত্র স্থাপন করা হয়। ৫০ বছরের পুরোনো ওই এক্স-রে যন্ত্রটি উপজেলাবাসীর ভরসা। ২০১০ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেই পুরোনো আমলের এনালগ পদ্ধতির এক্স-রে যন্ত্রটির স্থলে নতুন ডিজিটাল পদ্ধতির একটি এক্স-রে যন্ত্র স্থাপন করা হয়নি।

গত সোমবার সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মান্ধাতা আমলের এক্স-রে যন্ত্রটি বছরের অধিকাংশ সময় বিকল থাকে। ফলে যন্ত্রের কক্ষটি অনেক সময় বন্ধ থাকে।

এক্স-রে যন্ত্রের টেকনিশিয়ান খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আমি এ যন্ত্র দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছি। চলছে কোনোমতে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে ৮৬ রোগীর এক্স–রে করা হয়েছে। অনেক রোগী আসেন। পুরোনো যন্ত্র দেখে চলে যান অনেকেই। এখানে ডিজিটাল যন্ত্র হলে ভালো হয়।’

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একজন টেকনিশিয়ান নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য প্রথমে প্রয়োজন হয় সঠিক রোগ নির্ণয়ের। আর সঠিক রোগ নির্ণয় করতে প্রয়োজন উন্নত যন্ত্রপাতির। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালটিতে বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বহির্বিভাগে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। তালিকা অনুযায়ী, গত রোববারও ৫৪৩ জন রোগী চিকিৎসা নেন। অনেক রোগীর এক্স-রে করাতে হয়। কিন্তু এখানে যে এক্স-রে যন্ত্র রয়েছে, সেটি দিয়ে উন্নত এক্স-রে করানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে রোগীদের বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নোমান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানামতে, জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে শুধু সরাইলে এই পুরোনো যন্ত্র দিয়ে কাজ চলছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়ে আসছি। আমাদের এখানে নতুন ভবন হচ্ছে। ভরন নির্মাণ হলে একটি আধুনিক এক্স-রে যন্ত্র এখানে আসবে।’