কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গণপিটুনির ঘটনায় আরও তিনটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ বাদী হয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় একটি ও মাদারীপুর সদর থানায় দুটি হত্যা মামলা করেছে। এর আগে পালং মডেল থানায় আরও দুটি মামলা করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় এ নিয়ে মোট পাঁচটি মামলা করা হলো, যার তিনটি হত্যা, একটি ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় ও একটি অস্ত্র আইনে। ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানারগাঁও এলাকার এবাদুল ব্যাপারী (৪২), মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরচান্দা হাজী ছাবের আলী ব্যাপারীকান্দি এলাকার ছলেমান (৪১), কুতুবপুর হাচেন মাদবরকান্দি এলাকার সালাউদ্দিন মাদবর (৩০) ও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঠেংগামারি এলাকার সেক পান্নু (৪২)। আর দুজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
গণপিটুনির ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের দুজনের লাশ মাদারীপুর পৌর গণকবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তিনজনের লাশ পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছেন। আর একজনের লাশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে ও মাদারীপুর সদর উপজেলার বিদ্যাবাগিশ এলাকায় ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ে ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে আট ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন এবং ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের লাশ কীর্তিনাশা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনের মৃত্যু হয়েছে তেতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে ও একজনের মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গণপিটুনির ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানা ও পালং মডেল থানায় তিনটি হত্যা মামলা, একটি অস্ত্র আইনে মামলা ও একটি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা করা হয়েছে। ওই মামলাগুলো পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা–ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর নিহত ব্যক্তি ও আহত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের বেশ কিছু মামলা রয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া গেছে। কার বিরুদ্ধে কোন থানায় কতটি মামলা আছে, আমরা তা–ও সন্ধান করছি।’