রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এক মাস তাঁর বাগান থেকে ৮ মেট্রিক টন পেয়ারা পাঠানো হয়। স্থানীয় বাজারে যে পেয়ারা ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন, সেই পেয়ারা রপ্তানির সময় বিক্রি করতে পেরেছেন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা দরে। তিনি বলেন, ‘দামটাই বড় নয়, রপ্তানির দ্বার খুলেছে এতে আমি অনেক খুশি। এ ছাড়া অন্যান্য চাষিরাও খুশি হয়েছেন। ভবিষ্যতে রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করছি। রপ্তানিযোগ্য পেয়ারা উৎপাদনে কীটনাশক ছাড়া উত্তম কৃষি চর্চা (জিএপি) অনুসরণ করেছি আমি।’
কৃষি অ্যাসোসিয়েশন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও কৃষি উদ্যোক্তা মুনজের আলম বলেন, উচ্চ বরেন্দ্রভূমিতে পেয়ারা, আমসহ অন্যান্য ফল বেশি মিষ্টি হয়। এখানকার ফল বিদেশেও চাহিদা তৈরি করছে, এটা ফলচাষিদের জন্য সুখবর। ফলের রপ্তানি বাড়াতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
গ্যালাক্সি ফ্রেশ প্রডিউস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) হেদায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এক মাস আগে দুবাইয়ের লুলু হাইপার মার্কেটে নাচোলের পেয়ারা পাঠানো হয়। স্বাদের দিক থেকে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ভারতের পেয়ারাকে পেছনে ফেলেছে নাচোলের পেয়ারা। ওই সব দেশের পেয়ারার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাংলাদেশি পেয়ারার চাহিদা বাড়ায় তাঁরা দ্বিতীয়বারের মতো পেয়ারা রপ্তানির সুযোগ পেয়েছেন। আশা করছেন তাঁদের এ সুযোগ অব্যাহত থাকবে।
উচ্চ-শুষ্ক বরেন্দ্রভূমি বলতে বোঝানো হয় নাচোলকে। তবে নাচোলের সেই পরিচিতি বদলে দিয়েছেন ফলচাষিরা। মাটির বৈশিষ্ট্যের কারণে নাচোলের পেয়ারা স্বাদের দিক থেকে দেশসেরা বলে উল্লেখ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক পলাশ সরকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুবাইয়ের বাজারে অন্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের পেয়ারা বেশি চাহিদা তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের জন্য সুখের খবর। আমরা এটা অব্যাহত রাখার চেষ্টায় আছি। আশা করি নাচোলের পেয়ারা দেশের ফল রপ্তানিতে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।’
নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, তাঁদের তত্ত্বাবধানে উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে পেয়ারা চাষ হচ্ছে। বিদেশের বাজারে পেয়ারা আরও চাহিদা বাড়বে বলে তাঁরা আশা করছেন।