বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে

বরিশালে আগামী ৫ নভেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে আজ দুপুরে নগরের বরিশাল কলেজ সংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান
ছবি: প্রথম আলো

বরিশালে আগামী ৫ নভেম্বরের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। আজ শনিবার নগরের বরিশাল কলেজসংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতি সভায় তাঁরা এসব কথা বলেন।

আজ দুপুরে আয়োজিত ওই সভায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা অংশ নেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা বেগম সেলিমা রহমান।

প্রস্তুতি সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা আরও বলেন, আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালের গণসমাবেশ থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। তাই যেকোনো মূল্যে গণসমাবেশ সরকার পতনের সমাবেশে পরিণত করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে গণসমাবেশে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি দেখে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েও মানুষের স্রোত থামাতে পারেনি। আজ খুলনায় যে সমাবেশ হচ্ছে, তাকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে নজিরবিহীন যে নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছে, তা ইতিহাসে বিরল। বাস, ট্রেন, লঞ্চ, ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, নৌকা, রিকশা, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারি দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের নামিয়ে মহড়া দিয়েছে, হামলা করেছে। কিন্তু মানুষকে ফেরাতে পারেনি। মানুষ মাইলের পর মাইল হেঁটে, যে যেভাবে পেরেছে, সেভাবে সমাবেশে যোগ দিয়েছে।

দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা আরও বলেন, জনগণ এই সরকারের পদত্যাগ চায়। সেই চাওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন প্রতিটি নেতা-কর্মীর অভীষ্ট লক্ষ্য। আমাদের দাবি এখন একদফা আর সেটা হলো বর্তমান অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীন হতে হবে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সভার প্রধান অতিথি সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা এখন দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। এই লড়াই এখন এক দফার আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে কাজ করতে হবে।’

সেলিমা রহমান বলেন, খালেদা জিয়া এই সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন ও মিথ্যা অন্যায়ের সাজা ভোগ করার পরও এক সেকেন্ডের জন্যও মাথা নত করেননি, আপস করেননি। এই সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে আজকের এ আন্দোলন। আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে এবং খুন-জখম ও গ্রেপ্তার করে সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বিএনপির দুর্বার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বিএনপিকে রাজপথ থেকে কোনোভাবেই সরানো যাবে না।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির দলনেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল। মহানগর বিএনপি সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবিরের সঞ্চালনায় প্রস্তুতিমূলক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাপ নেতা চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপি মিডিয়া সেল প্রধান ও সাবেক সংসদ জহির উদ্দিন স্বপন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনোকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদ, আবু নাসের মুহাম্মাদ রহমত উল্লাহ।