সকাল থেকে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের শহীদ ওমর ফারুক মিলনায়তন। শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের সঙ্গে মেতে ওঠে খোশগল্পে, কেউ আবার সেলফি তোলায় ব্যস্ত। সবারই চোখেমুখে ছিল সাফল্যের আনন্দ, ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন। পিরোজপুরে আজ মঙ্গলবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেখা যায় এমন চিত্র।
‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিখোর পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর আয়োজনে পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের শহীদ ওমর ফারুক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় কৃতী শিক্ষার্থীদের এ সংবর্ধনা। অনুষ্ঠানে জেলার ৭টি উপজেলার প্রায় ১৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকাল ১০টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রবেশপথের নিবন্ধন বুথ থেকে কার্ড, নাশতা ও ক্রেস্ট নিয়ে উৎসব প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
বন্ধুসভার সহসভাপতি সুমাইয়া আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি আ স ম মাহমুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মিথ্যা, মুখস্থবিদ্যা ও মাদকের বিরুদ্ধে অঙ্গীকার করান প্রথম আলোর জলবায়ু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. খলিলুল্লাহ।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইসরাত জাহান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ও আফতাব উদ্দিন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মো. লুৎফর রহমান।
কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পিরোজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসরাত জাহান বলেন, ‘যারা জিপিএ-৫ পেয়েছে, তারা সত্যিকারের মেধাবী। তবে শুধু মেধাবী হলেই চলবে না, মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ হতে হবে। মা–বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। প্রচুর বই পড়তে হবে, তবেই তোমরা সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারবে।’
অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ‘এই পথ পাড়ি দেওয়া তোমাদের জন্য সহজ ছিল না। অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। প্রত্যাশা করি, তোমরা আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। তোমাদের এই অগ্রযাত্রায় অভিভাবক, শিক্ষকদের অবদান আছে। মনে রাখতে হবে, এ পর্যায়ে আসতে সর্বস্তরের মানুষেরও অবদান আছে।’
এর আগে সকালে উৎসব প্রাঙ্গণে বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি তোলায় ব্যস্ত ছিল জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থী তানিয়া জাহান। সে বলে, ‘অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমি খুব খুশি। অনেক দিন পর পুরোনো বন্ধুদের পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এ আয়োজন আমাদের জন্য প্রেরণা হয়ে থাকবে।’
অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে চলে গান, নৃত্য। জিপিএ-৫ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের থিম সংয়ের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। কুইজে অংশ নেওয়া ১০ শিক্ষার্থীকে মঞ্চে ডেকে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে গান পরিবেশন করেন ব্যান্ডের সংগীতশিল্পী তানভীর হোসেন ও মহিউদ্দিন মুন্না এবং তাঁদের দল।
আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা-গ্রি এবং সহযোগিতায় কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।