রাজশাহী সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন না বিএনপির সাহিদ

মো. সাহিদ হাসান
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. সাহিদ হাসান। ৪ মে তিনি এই ঘোষণা দিয়ে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘ইতিবাচকভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছি। পরিবেশ–পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, সেটাও দেখছি। সব মিলিয়ে পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’ এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন তিনি। আসন্ন সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছেন না।

বিকেলে সাহিদ হাসান বলেছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সিটি নির্বাচন নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর ভাষ্য, আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে না। নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। তাই আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাহিদ।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে একটি বিবৃতিও প্রথম আলোকে পাঠিয়েছেন বিএনপি নেতা সাহিদ। সেখানে বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি তিনি পূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধাশীল।

সাহিদ জানান, সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ভাবনার বিষয়টি প্রকাশ করার পর অনেক কেন্দ্রীয় নেতা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা সিটি নির্বাচন নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি মনে করি, আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে না। নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাহিদ হাসান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফার ভাই। তিনি রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। পরে রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হন। মহানগর ছাত্রদলেরও সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে মহানগর বিএনপির কমিটিতে মিজানুর রহমান সভাপতি ও শফিকুল হক সাধারণ সম্পাদক হলে ওই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হন সাহিদ।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান (মিনু) ও সাহিদ। বিএনপি দুজনকেই মনোনয়ন দেয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুজনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরে মিজানুরের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হলে সাহিদ নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। সাহিদের ভাই নাদিম রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সাহিদ বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চালান। মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও বিএনপি সামনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলে দলীয় প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান সাহিদ।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টি মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। টানা চারবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান। ইসলামী আন্দোলন রাজশাহী মহানগর কমিটির সহসভাপতি মুরশিদ আলম ফারুকীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আর জাতীয় পার্টি মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে। ২৩ মে পর্যন্ত এই সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।

মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ বলেন, দলের শীর্ষ পর্যায়ে আগে থেকেই ঘোষণা করা আছে যে তারা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না। এমনকি এই নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নিলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে দল। তবে সাহিদ হাসানের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মামুনুর।