মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খানকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আলীপুর গ্রামের সাহেব বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুনের কবরে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সিরাজুল আলম খানের তৃতীয় ও শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মায়ের শাড়িতে মুড়িয়ে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজার আগে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সিরাজুল আলম খানকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসির আরাফাত।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা দুইটার দিকে আলীপুর গ্রামের পৈতৃক ভিটায় সিরাজুল আলম খানের মরদেহ আনা হয়। সেখানে এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে উপস্থিত হন নোয়াখালী-৩ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ কিরন; জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম জাফর উল্যাহ। বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও শিমুল বিশ্বাস, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাশ।
এ ছাড়া সিরাজুল আলম খানের মরদেহের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, ভাইস চেয়ারম্যান তানিয়া রব, কবি ফরহাদ মজহার, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ।
সিরাজুল আলম খান আর নেই
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম জাফর উল্যাহ, ইউএনও মো. ইয়াসির আরাফাত ও সিরাজুল আলম খানের ফুফাতো ভাই ফরহাদ মজহার।
সিরাজুল আলম খানের জানাজা পড়ান চৌমুহনী দারুর উলুম মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ মাওলানা আবদুর রহিম। জানাজায় সিরাজুল আলম খানের আত্মীয়স্বজন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও নানা শ্রেণি–পেশার হাজারো মুসল্লি অংশ নেন।
গতকাল শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজুল আলম খান মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘দাদাভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে তাঁর উদ্যোগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠিত হয়।