সিলেটে আরও ৪ মামলা, সাবেক সংসদ সদস্য-মেয়রসহ আ.লীগ নেতারা আসামি
সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলার অভিযোগে নতুন করে আরও চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে আদালতে আজ বৃহস্পতিবার দুটি ও গতকাল বুধবার মহানগরের শাহপরান থানায় দুটি মামলা হয়। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য, মেয়র, কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আসামি করা হয়েছে।
আজ হওয়া দুটি মামলার মধ্যে একটি সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মোমেনের আদালতে হয়েছে। বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে মামলাটি করেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মো. আবদুর রহমান। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী মো. সাওম খান সায়েম। তিনি জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিলেটের পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আবদুর রহমানের মামলায় ১০১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, মহানগর পুলিশের তৎকালীন উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান প্রমুখ আসামি হয়েছেন।
মামলার আরজিতে আবদুর রহমান উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বন্দরবাজার এলাকায় মধুবন মার্কেটের সামনে আসামিরা দেশি-বিদেশি বন্দুক দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া সাউন্ড গ্রেনেড ও ককটেল বিস্ফোরণ করে অনেককে গুরুতর আহত করেন। এ সময় বাদী মারধরের শিকার হন এবং তাঁর টাকা ছিনতাই হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
অন্যদিকে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবার আদালতে একটি মামলা করেছেন নগরের শেখপাড়া কুমারগাঁও এলাকার মোছা. ছুরনা বেগম। আরজিতে বাদী জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট বেলা দুইটার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ সশস্ত্র হামলা চালান। এতে অনেকের সঙ্গে বাদীর ছেলে ও দেবর গুরুতর আহত হন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
মামলায় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, উপপুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ রানা, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুজাত আলী রফিক, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাস ও মখলিছুর রহমান কামরান এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান প্রমুখ আসামি হয়েছেন।
এ ছাড়া মহানগরের শাহপরান থানায় মেজরটিলা এলাকার বাসিন্দা মো. মাহফুজ আহমদ গতকাল একটি মামলা করেছেন বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। তিনি জানান, মামলায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ৮০ থেকে ৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর বাইরে গতকাল আরেকটি মামলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মাহফুজ আহমদের করা মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, মহানগর যুবলীগের প্রচার সম্পাদক মোহাইমিনুল ইসলাম প্রমুখ আসামি হয়েছেন। সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, খাদিমপাড়া এলাকায় বেআইনি জনতা তাঁকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে জখম করার পাশাপাশি চাঁদা দাবি করে হুমকি দেন।