নাবিকদের জিম্মি করে মোংলা বন্দর চ্যানেলে বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতি

মোংলা বন্দর চ্যানেলে অবস্থান করা বাণিজ্যক জাহাজ এমভি সেজুঁতিতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে
ছবি: সংগৃহীত

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে মোংলা সমুদ্রবন্দরের পশুর চ্যানেলে অবস্থান করা এমভি সেজুঁতি নামক একটি বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার ভোররাতে সশস্ত্র ডাকাত দলটি জাহাজের ইঞ্জিনের যন্ত্রপাতি, কম্পিউটারসহ অন্তত ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে দাবি মালিকপক্ষের। এ ঘটনায় মামলা করতে মোংলায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জাহাজটির শিপিং এজেন্ট পিএনএন শিপিং লাইনস লিমিটেড।

এদিকে জাহাজে ডাকাতির খবর শুনে আজ সকালেই ওই এলাকায় টহল দিয়েছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন। এক লিখিত বিবৃতিতে জাহাজটির প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুল হক জানান, গতকাল রোববার দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে একদল ডাকাত অ্যাঙ্কর চেইনের ভেতর দিয়ে জাহাজে প্রবেশ করে। তারা রামদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে জাহাজের সবাইকে জিম্মি করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। ডাকাতেরা তাদের ইচ্ছেমতো ইঞ্জিনকক্ষসহ যেখানে যা আছে সব নিয়ে আজ ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে চলে যায়। তারা জাহাজের ইঞ্জিনের স্পেয়ার পার্টস, ২০০ পিস বেয়ারিং, ব্যাটারি, চার্জার, ড্রিল মেশিন, তেলের ড্রাম, গ্যাসের বোতল, অক্সিজেন বোতল, কম্পিউটার, চেয়ার, সাবমারসিবল পাম্প, ইলেকট্রিক তার, আটটি স্মার্টফোন ও নগদ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

জাহাজটির শিপিং এজেন্ট পিএনএন শিপিং লাইনসের কর্মকর্তা আতাউস সালাম বলেন, একদল জলদস্যু অস্ত্রসহ জাহাজে প্রবেশ করে সাতজন নাবিক ও ক্রুকে জিম্মি করে। তারা নগদ টাকাসহ ১৬ ধরনের মালামাল নিয়ে যায়। এসবের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় মোংলা থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া মোংলা বন্দর, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানোর প্রক্রিয়া চলছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি, জাহাজ কর্তৃপক্ষ বা শিপিং এজেন্ট কেউ আমাদের লিখিতভাবে কিছু জানায়নি।’ মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘একটি ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের জাহাজ কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের জুনে বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি সেজুঁতি ভারত থেকে পাথর বোঝাই করে মোংলা সমুদ্রবন্দর চ্যানেল এলাকায় নোঙর করে। সেখানে পণ্য খালাস শেষ করে। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় এক বছর ধরে এটি বন্দরে আটকে রয়েছে।