মাদারীপুরে বিএনপির মিছিলে ছাত্রলীগ নেতা ও তাঁর দুই ভাই, সবাইকে কুপিয়ে আহত
মাদারীপুরে বিএনপির বিজয় মিছিলে যোগ দেওয়া পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও তাঁর দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে পাঠানো হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আজ বুধবার দুপুরে শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন মাদারীপুর পৌরসভার নতুন মাদারীপুর গ্রামের আজিজ মুন্সির ছেলে লিখন মুন্সি (২৫), মিলন মুন্সি (৩০) ও সোহাগ মুন্সি (২৭)। তাঁদের মধ্যে লিখন মুন্সি মাদারীপুর পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তিনি শ্রমিক দল নেতা শাকিল মুন্সি হত্যা মামলার আসামি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জেলা বিএনপির আয়োজনে গণ–অভ্যুত্থান উপলক্ষে একটি বিজয় মিছিল শকুনি লেকেরপাড় থেকে বের হয়ে ইটেরপুলের দিকে রওনা দেয়। এতে অংশ নেন লিখন মুন্সিসহ তাঁর চার ভাই। এ সময় পেছন থেকে লিখনের মেজ ভাই মিলনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তাঁকে বাঁচাতে লিখন ও সোহাগ এগিয়ে এলে তাঁদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
পরে তিন ভাইকে উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পূর্বশত্রুতার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের।
এদিকে তিন ভাইকে কুপিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া দিয়ে একই এলাকার মামুন ঢালীর ছেলে আবির ঢালীকে (২৬) কুপিয়ে আহত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে আবির ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, শ্রমিক দল নেতা শাকিল মুন্সি হত্যাকাণ্ডের জের ধরে এই হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে লিখন মুন্সির লোকজন আবির ঢালী নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করেছে, তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মার্চ রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার ‘নতুন মাদারীপুর’ এলাকায় সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি (একাংশ) ও নতুন মাদারীপুর এলাকার মোফাজ্জেল মুন্সির ছেলে শাকিল মুন্সিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় ২৬ মার্চ দুপুরে নিহত শাকিলের বড় ভাই হাসান মুন্সি বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ৬৭ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় আসামি করা হয় লিখন মুন্সিকে।
বিএনপির বিজয় মিছিলে ছাত্রলীগ নেতার অংশগ্রহণ ও হামলা প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের শোভাযাত্রায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কেউ জড়িত না। হামলাকারী ও হামলার শিকার উভয়ই বহিরাগত। এখানে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জের ধরে বহিরাগত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতাসহ তিনজনকে কুপিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানকে বিব্রত করতে ও বিএনপির সুনাম নষ্ট করতে বহিরাগতরা এই হামলা করেছে। এখানে বিএনপির কেউ কোনোভাবে জড়িত নয়।’