পুকুরের মাটি কেটে বিক্রি

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২৬ মার্চ দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। 

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের পুকুর থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান পাথরাইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের পুকুর থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ সরকার রাস্তা সংস্কারের কথা বলে পুকুর থেকে মাটি কাটা শুরু করেন। এখন মাটি ট্রলি করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

রামপ্রসাদ সরকার পাথরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। পাথরাইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা পুকুরের মাটি কেটে বিক্রির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২৬ মার্চ দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেছেন। 

লিখিত অভিযোগে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেছেন, পাথরাইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের তিন দিক ঘিরে রয়েছে বড় একটি পুকুর। বৃষ্টি ও বন্যার কারণে পুকুরে পাড় ভেঙে পড়েছে। স্কুলের পূর্বপাশের একটি রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য গত মাসে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি রাস্তা সংস্কার করার কথা বলেন। ১০–১২ দিন আগে ইউপি চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ সরকার স্কুলের পুকুরের মাটি কেটে পুকুরের পাড় বাঁধানো এবং রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেন। 

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পাথরাইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরটিতে এখন পানি নেই। দুই জায়গা দিয়ে পুকুরে ট্রাক্টর ও ভেকু (মাটি কাটার যন্ত্র) নামানোর জন্য রাস্তা করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব পাশে নামানো রয়েছে একটি ট্রাক্টরচালিত ট্রলি। পশ্চিম দিকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। চেয়ারম্যানের ১০–১২ জন যুবক মাটি কাটার কাজ তদারক করছেন। 

স্থানীয় চারজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এ পুকুরে অল্প পানি ছিল। চেয়ারম্যানের লোকজন পাম্প দিয়ে সে পানি নিষ্কাশন করে ১০–১২ দিন আগে মাটি কাটা শুরু করেন। দিনে মাটি কেটে পুকুরের পাড় বাঁধাই ও রাস্তা সংস্কার করা হয়। কিন্তু রাতভর মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করা হয়। এলাকাবাসীর বাধার মুখে কয়েক দিন মাটি কাটা বন্ধ ছিল। ২৪ মার্চ থেকে আবার মাটি কাটা শুরু হয়েছে। 

এ বিষয়ে পাথরাইল ইউপি চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ সরকার বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই পুকুরের মাটি কেটে রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। মাটি বিক্রির যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বীনবন্ধু প্রামাণিক জানান, রাস্তা সংস্কার ও পুকুরের পাড় বাঁধানোর জন্য মাটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে সেখান থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে কি না, তা তাঁর জানা নেই। 

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন এক ছাত্র বলেন, মাটি কাটায় পুকুর গভীর হচ্ছে। বর্ষায় স্কুলের স্থাপনা ও যে রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে, তা হুমকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। 

দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা আলী বলেন, একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। সেখানে রাতে পুলিশের টহল দল যেন থাকে।