তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি গড়াল তৃতীয় দিনে

আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করাসহ তিন দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্র সামিউল ইসলাম। আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের খেলার মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করাসহ তিন দফা দাবিতে সামিউল ইসলাম ওরফে প্রত্যয় নামের এক শিক্ষার্থী আজ তৃতীয় দিনের মতো মীর মশাররফ হোসেন হলের খেলার মাঠে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। গত বুধবার রাতে তিনি ওই মাঠে অবস্থান নেন।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কাঁথা বিছিয়ে সেখানে শুয়ে আছেন সামিউল। তাঁর পাশে একটি প্ল্যাকার্ডে তিনটি দাবির কথা লেখা। সেগুলো হলো গণরুমের বিলুপ্তি, অছাত্রদের হল ত্যাগ ও হলের মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন নিশ্চিত করা।

সামিউল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৯তম ব্যাচের) ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র। তাঁর অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সেখানে যান। তাঁরা অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীর দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাসও দেন। তবে দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান সামিউল।

আরও পড়ুন

সামিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে এখানে অবস্থান করছি। গতকাল শুক্রবার উপাচার্য স্যার এসেছিলেন। তিনি বলেছেন আমাকে একটা কক্ষ দেবেন, প্রয়োজনে সিঙ্গেল রুম দেবেন। কিন্তু এই দাবি তো আমার নিজের জন্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন থেকে আমার জন্য স্যালাইন আনা হয়েছিল। আমি বলেছি, অছাত্রদের তালিকা করে একটা দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আমি স্যালাইন নেব। আর দাবিগুলো পুরোপুরি মানা হলেই কেবল এখান থেকে উঠব।’

উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁর দাবিগুলো যৌক্তিক, তবে বাস্তবায়ন করতে একটু সময় প্রয়োজন। আমরা ইতিমধ্যে গণরুম বিলুপ্তির জন্য নতুন হল চালু করেছি। বাকি নির্মাণাধীন নতুন হলগুলো চালু হলে এ সমস্যা থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘অছাত্রদের বের করার জন্য দুই মাস আগেও নোটিশ দিয়েছি। অছাত্রদের বের করার জন্য কার্যক্রম চলমান। তারা বের না হলে তো পুলিশ দিয়ে বের করা যায় না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ওয়ার্ডেন (শিক্ষার্থীদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা) অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘আমি গত কয়েক দিনে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কয়েকবার দেখা করেছি। তাঁকে হল প্রশাসন থেকে আসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর অন্য দাবিগুলোও মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি। এমনকি সে যদি মুখের কথায় বিশ্বাস না করে, তাহলে লিখিত দেব বলেছি। তবে সব কটি দাবি বাস্তবায়নের জন্য সময় চেয়েছি। তাঁর রুমমেট অছাত্র, তাঁকেও হল থেকে বের করে দিতে চেয়েছি। কিন্তু সে তাঁর সব দাবি মেনে নিতে আমাদের সময় দিতেও রাজি হচ্ছে না।’