চার জেলায় পদ্মার চরে হঠাৎ কেন দেড় হাজার পুলিশের বিশেষ অভিযান

রাজশাহী রেঞ্জের অধীন রাজশাহী, পাবনা ও নাটোরে পরিচালিত অভিযানের নাম পুলিশ দিয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। নাটোরের লালপুরে পদ্মার চরেছবি: পুলিশের সৌজন্যে

চার জেলা রাজশাহীর বাঘা, পাবনার বেড়া ও ঈশ্বরদী, নাটোরের লালপুর ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার চরে আজ রোববার সকাল থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। অভিযানে পুলিশের রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জের দেড় হাজার সদস্য অংশ নিয়েছেন।

পুলিশ রাজশাহী রেঞ্জের অধীন রাজশাহী, পাবনা ও নাটোরে পরিচালিত অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। অভিযানে তাদের ১ হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য আছেন। তবে খুলনা রেঞ্জের অধীন কুষ্টিয়ায় যে অভিযান চলছে, এর কোনো নাম দেওয়া হয়নি। এখানে অভিযানে আছেন ৩০০ পুলিশ সদস্য।

সম্প্রতি পদ্মার চরকেন্দ্রিক অপরাধ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে ‘কাকন বাহিনী’র নাম আসে। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা কথায় কথায় গুলি করে, মানুষ হত্যা করে, চরের বালু ও ফসল লুট করে, অপহরণ ও চাঁদাবাজি করে।

সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর চরে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে ‘কাকন বাহিনী’র গুলিতে তিন কৃষক নিহত হন। এ ঘটনায় বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ কয়েকজনের নামে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়। রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় মোট ছয়টি মামলা হয়েছে এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে।

পদ্মার চরে পুলিশের অভিযান। নাটোরের লালপুরে
ছবি: পুলিশের সৌজন্যে

গত ৩১ অক্টোবর ‘কথার আগে গুলি চালায় “কাকন বাহিনী”, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

রাজশাহী: রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, আজ ভোরে এ অভিযান শুরু হয়। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত এই বিশেষ অভিযানে আছেন ১ হাজার ২০০ সদস্য। অভিযানে ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। ‘কাকন বাহিনী’র ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

নাটোর: নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পদ্মার চরাঞ্চলের সন্ত্রাস নির্মূলে নদীতে ও স্থলভাগে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। অভিযান পরিচালনা করা হয় লালপুরের সীমান্তবর্তী চার দিয়াড় বাহাদুরপুর, চর জাজিরা ও চর লালপুর এলাকায়। ১৪টি নৌকায় ১০টি দলে বিভক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁদের আদালতে হাজির করা হবে। জব্দ করা মালামালের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

চর দিয়াড় বাহাদুরপুরের মৎস্যজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, এলাকা থেকে পুলিশ যাঁদের ধরে নিয়ে গেছে, তাঁরা প্রায় সবাই ‘কাকন বাহিনী’র সদস্য।

কুষ্টিয়া: জেলার পদ্মা নদীর চরগুলোয় বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আজ ভোর ৫টা থেকে জেলার আওতাধীন পদ্মা নদী ও এর চরগুলোয় এই অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) শেখ জয়নুদ্দীনের নেতৃত্বে জেলার তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য অভিযানে অংশ নিয়েছেন। অভিযানে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানও আছেন।

কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরে পুলিশের বিশেষ অভিযান
ছবি: পুলিশের সৌজন্যে

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযানস্থল থেকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) ফয়সাল মাহমুদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চর এলাকায় ‘কাকন বাহিনী’সহ যেসব সন্ত্রাসী বাহিনী আছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে, তাদের ধরতে এই অভিযান চলছে। ড্রোন দিয়ে বিভিন্ন চরের কাশবন, কলাবাগানসহ জঙ্গলের ভেতর দেখা হচ্ছে। একাধিক ড্র্রোন ওড়ানো হয়েছে।

আরও পড়ুন