সাংবাদিককে পিটিয়ে মদসহ পুলিশে দিলেন আ.লীগের কর্মীরা

আহত সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে নাজিম উদ্দিন ওরফে খোকন (৫০) নামের এক সাংবাদিককে পিটিয়ে দুই লিটার দেশীয় মদসহ পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় মামলা করেছেন আওয়ামী লীগের এক কর্মী। মামলাটিতে আজ সোমবার তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল রোববার রাতে নাজিমকে মারধরের ঘটনা ঘটে। তিনি দৈনিক মানবজমিনের উপজেলা প্রতিনিধি। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার পর আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটির বাদী শরীফ উল্যাহ ওরফে আবুল কালাম। তিনি এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

হামলা ও মামলায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানকে আজ সন্ধ্যায় একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তাঁরা কল রিসিভ করেননি।

স্থানীয় সাংবাদিকদের দাবি, কোম্পানীগঞ্জের আলোচিত ‘হেলমেট বাহিনী’ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে নাজিম উদ্দিনের ওপর হামলা ও মামলা করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী শরীফ উল্যাহ উল্লেখ করেন, তিনিসহ কয়েকজন ব্যক্তি রোববার রাত নয়টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পশু হাসপাতালের সামনে নাজিম উদ্দিন তাঁদের দেখে দৌড়ে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে যান। তখন তাঁরা গিয়ে নাজিমের কাছে একটি প্লাস্টিকের বোতলে দুই লিটার মদ পান। এ বিষয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ নাজিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে সাংবাদিক নাজিম উদ্দিনের ছেলে শাহরিয়ার নাজিম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিনের মতো রাতে তাঁর বাবা বসুরহাট বাইপাস সড়কে হাঁটতে বের হয়েছিলেন। রাত আনুমানিক নয়টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একদল কর্মী তাঁর বাবাকে পিটিয়ে আহত করে গায়ে মদ ঢেলে দিয়েছেন। এরপর আহত অবস্থায় ওই নেতা-কর্মীরা তাঁর বাবাকে থানায় নিয়ে গেছেন। পরে পুলিশ তাঁর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ আহত অবস্থায় নাজিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন কি না, তা পরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাবলিক মদসহ ধরছে, পাবলিক বাদী। আমরা কী বলব? আমরা ওনাকে হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় ভর্তি করেছি।’