পৌর মেয়র গুলিবিদ্ধের ঘটনায় আ.লীগ নেতাসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ২

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বালু তোলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিমসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে মেয়রের সহযোগী মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় এ মামলা করেন।

মামলায় ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুল হকসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় পুলিশ আজ সকালে উপজেলার সোনাপুর এলাকা থেকে মো. শাকিল (১৯) ও নুরুল আলম (৪০) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আরও পড়ুন

এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মিরসরাই উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ফেনী নদীতে মেয়র রেজাউল করিম ওরফে খোকনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা অশোক সেন ও সাহেদ খান নামের মেয়রের দুই সহযোগীও আহত হন। রেজাউল করিম বারইয়াহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নে স্থাপিত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা ভরাট করতে মেয়র রেজাউল ফেনী নদী থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। কয়েক দিন ধরে সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুল হকের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী বালু তুলতে বাধা দিয়ে আসছেন। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে শ্রমিকদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। বিষয়টি জানার পর মেয়র গতকাল নিজেই সরেজমিনে দেখতে যান। এ সময় মজিবুল হকের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২২ জন তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তাঁদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মেয়র রেজাউল করিম, আওয়ামী লীগ নেতা অশোক সেন, যুবলীগ নেতা সাঈদ খানসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

তবে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন মজিবুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল তিনি এলাকায় ছিলেন না। ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় ছিলেন। এরপরও তাঁকে একটি মিথ্যা সাজানো মামলায় আসামি করা হয়েছে।

মজিবুল হকের দাবি, মেয়র রেজাউল করিম তাঁর ইজারা নেওয়া জমি থেকে বালু তুলছেন। তিনি বলেন, ‘মেয়র রেজাউল করিম আমার ইজারা নেওয়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু তুলতে এলে স্থানীয় লোকজন তাঁদের ধাওয়া করেছেন। মেয়র স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় নিজেরাই নিজেদের গুলিতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমার কোনো যোগসূত্র নেই।’

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।

এদিকে আজ সকালে ফেনীর পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান ও সোনাগাজী সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মাশকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় পুলিশ সুপার জাকির হাসান বালু ও সরকারি সম্পত্তি বিনষ্টকারী এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ওসিকে নিদের্শ দেন।