পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ভয়ংকর মাদক প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়নের আলমপুরে
ছবি: প্রথম আলো

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ৬৫ ভাগ, যা পৃথিবীর অনেক দেশেই নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট ও উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু সম্ভাবনাময় এই দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ভয়ংকর মাদক প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় একটি মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও মানসিক হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়নের আলমপুরে আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্র নামের প্রতিষ্ঠানটি আজ উদ্বোধন করা হয়েছে। পাঁচতলাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে রয়েছে ৫০টি শয্যা, একক ও দলীয় কাউন্সেলিং সুবিধা, মেডিটেশন, লাইব্রেরি, শরীরচর্চার জন্য জিম ও প্রার্থনাকক্ষ।

অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেশ ডিজিটাল হয়েছে। তিনি স্বপ্ন দেখছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ পরিণত করতে। সেভাবেই কাজ চলছে। আমাদের উন্নয়ন কেউ আটকাতে পারবে না। যদি আমাদের যুবসমাজ মাদকের ভয়ংকর ছোবলে আটকে যায়, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়নের পথ হারানোর আশঙ্কা থেকে যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিধি ছোট ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি বিস্তৃত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করা হয়েছে। দেশে মাদকের প্রবেশ আটকাতে বর্ডারে বিজিবি রয়েছে। পুলিশ, আনসার ও র‍্যাব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকতে বলেছেন। যারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত হোক, যারাই মাদক ব্যবসায়ী হোক, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসাকেন্দ্রের সেবাগ্রহণকারীরা স্বাগত সংগীত পরিবেশন করেন। শেষে অতিথিদের সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন মিশনের স্বাস্থ্য খাতের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল, পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল-মামুন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের আবাসিক মনোচিকিৎসক রাহেনুল ইসলাম, শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্রের বিভিন্ন ইউনিট ও কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন অতিথিরা।