শিশু হত্যার দায়ে এক যুগ পর ফরিদপুরে দুজনের যাবজ্জীবন

আদালতের রায়
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু আদেল উদ্দিন সরদারকে (১৩) হত্যার দায়ে দুজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাঁদের প্রত্যেককে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এর ১২ বছর পর রোববার এ রায় ঘোষণা করা হলো। ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ওই দুই আসামি হলেন, ভাঙ্গার মালিগ্রাম এলাকার মো. সিকিম আলী (৪০) ও সদরপুরের চরমানাই এর আকরাম মাতুব্বর (৪৭)। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর তাঁদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, আদেল উদ্দিন সরদার ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নাছিরাবাদ ইউনিয়নের দুয়াইর গ্রামের কৃষক খালেক সরদারের ছেলে। শিশুটি স্থানীয় সৈয়দ জয়নাল আবেদিন উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ত। ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আদেল বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে চরদুয়াইর মোল্লার মোড়ের এক মুদিদোকানে টেলিভিশন দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। আট দিন পর ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া-শিমুল বাজার আঞ্চলিক সড়কের পাশের এক গম খেত থেকে গলিত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা খালেক সরদার ১৫ ফেব্রুয়ারি ভাঙ্গা থানায় মো. সিকিম আলী ও আকরাম মাতুব্বরকে আসামি করে একটি হত্যা করেন। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর পুলিশ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সানোয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের সঙ্গে শিশুটির পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এ বিরোধের জেরে ওই শিশুটিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিনিয়ত দেশে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে চলছে। এ রায় এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে এবং জমি নিয়ে বিরোধের কারণে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।