নিহত শাওন ভূঁইয়া
ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যুবদল কর্মী শাওন ভূঁইয়া (২২) মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে শাওনের সঙ্গে থাকা মুন্সিগঞ্জ ছাত্রদলের এক নেতা মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। শাওন ভূঁইয়া (২২) সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার তোয়াব আলীর ছেলে। শাওন পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ছিলেন। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন শাওন। তিনি মুক্তারপুর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী ছিলেন।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় বুধবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়
ছবি: প্রথম আলো

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং দলীয় নেতা-কর্মী হত্যার প্রতিবাদে মুন্সিগঞ্জ শহরের অদূরে মুক্তারপুরে গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে শাওন ভূঁইয়া ও বিএনপির সমর্থক জাহাঙ্গীর মাদবর (৩৮) গুরুতর আহত হন।

আরও পড়ুন

মুন্সিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে আহত ৮০

শাওনের ছোট ভাই সোহান ভূঁইয়া আজ রাত নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, শাওন বাবার সঙ্গে রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। বুধবার বিএনপির সমাবেশে এসেছিলেন। পরে পুলিশ তাঁকে লক্ষ্য করে মাথায় গুলি করে। এতে তাঁর ভাই তখনই জ্ঞান হারান। তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ছাত্রলীগ এবং পুলিশের লোকজন তাঁর ভাইকে চিকিৎসা করাতে দেননি। তাঁরা শাওনকে ঢাকায় নিয়ে আসতে চাইলেও সেখানেও তাঁদের আটকে দেন। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে শাওনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এরপর থেকে তাঁর ভাই লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, বেলা তিনটার দিকে পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মুক্তারপুর মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ তাঁদের সেখানে জড়ো হতে নিষেধ করলে তাঁরা মুক্তারপুর থেকে ট্রাকে পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় যান। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। তখন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম একটি মিছিলের ব্যানার ধরে টান দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৭০ জন আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মী ৫০ থেকে ৬০ জন, ৩ জন সংবাদকর্মী এবং ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

আরও পড়ুন

মুন্সিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত ৩ জন ঢাকা মেডিকেলে, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেবের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তারিকুজ্জামান। যুবদল কর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি এখনো তিনি জানেন না।

আরও পড়ুন

বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা, রণক্ষেত্র এলাকা