রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টির ঘোষিত ইশতেহার অনুষ্ঠানের হট্টগোলের ঘটনায় তিনজনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতীয় পার্টির কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছেন মেয়র প্রার্থী ও মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে জেলার জাতীয় পার্টির জেলার আহ্বায়ক ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন, সদস্য মাইনুল ইসলাম ও তোফায়েল আহমেদকে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মহানগর কমিটির সভায় ওই তিন নেতাকে অবাঞ্ছিত করার ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর আজ রোববার তাঁরা কেন্দ্রে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, গতকাল ইশতেহার ঘোষণার পর সামান্য কারণে হট্টগোল শুরু করেন তাঁরা। পরে আবারও বিশৃঙ্খলা করেন। এ জন্য তাঁরা মহানগর কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল দুপুর ১২টায় প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ৩৬ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন দলটির রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মিন্টু। ইশতেহার পড়া শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার ঠিক আগে একজন সাংবাদিক উপস্থিত নেতাদের নাম-পরিচয় জানতে চান। তখন সালাউদ্দিন মিন্টু উপস্থিত নেতাদের নাম-পরিচয় বলতে থাকেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলার আহ্বায়ক আবুল হোসেনের পদবি না বলায় আপত্তি জানান আবুল হোসেন। তিনি দাবি করেন, তিনি বর্তমান চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা। কিন্তু সালাউদ্দিন তা মানতে নারাজ। এই নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। প্রার্থী সাইফুল বারবার থামতে বলেন। একপর্যায়ে তিনিও হট্টগোলে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উপস্থিত অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মীর সবাই উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে থাকেন। কেউ থামতে বলেন, কেউ নানা রকম অভিযোগ করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়র প্রার্থী বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন ওঠেন, তাঁর কোনো দল নেই। পরে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলার সদস্যসচিব শামসুদ্দিন রিন্টু ও কর্মীরা প্রার্থীকে বাইরে হাত ধরে টেনে নিয়ে রিকশায় উঠিয়ে দেন। অবশ্য ১৫ মিনিট পর প্রার্থী আবার আসেন। এ সময় তিনি আবার সাংবাদিকদের কাছে এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে নেন।
আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি এ ধরনের কিছু শুনিনি। সেখানে তো তেমন কিছুই হয়নি। আমার পদবি না বলাতে একজন ভুল ধরিয়ে দেন। সেই ঘটনা তো ওখানেই শেষ। আমি ইশতেহার অনুষ্ঠান শেষ করে প্রার্থীসহ সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার খবরে অবাক হচ্ছি। আবার কেন্দ্রে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। এমন তো কিছু হয়নি। আমরা সবাই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি। আরও প্রচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’