এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়েছে। ব্যবসায়ী বিল্লাল ব্যাপারী গত রোববার মামলাটি করেছেন। ওই মামলার আসামিদের মধ্যে ডামুড্যা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাচ্চু মাদবর, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান মাদবর রয়েছেন। আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ঘটনাটি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাচ্চু, জুলহাস মাদবর ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান আপন তিন ভাই। তাঁদের মধ্যে আসাদুজ্জামান বাচ্চু মাদবর ডামুড্যা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তাঁদের প্রতিবেশী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল ব্যাপারী। ইসমাইলের ছেলে বিল্লাল ডামুড্যা বাজারের ব্যবসায়ী। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ব্যবসা ও নির্বাচনে আসাদুজ্জামান বাচ্চু মাদবরের পক্ষ না নেওয়ায় বিল্লালের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বিভিন্ন সময় ওই তিন নেতা বিল্লালের কাছে চাঁদা দাবি করেন। এ ঘটনা নিয়ে কয়েক দফায় ডামুড্যা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বিল্লাল। চাঁদা না দেওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ওই তিন নেতা তাঁদের কয়েক অনুসারীকে নিয়ে বিল্লালকে মারধর করেন।
এ বিষয়ে আজ দুপুরে শরীয়তপুর শহরের চৌরঙ্গীর মোড়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিল্লাল ব্যাপারীর পরিবার। ওই সংবাদ সম্মেলনে বিল্লালের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল ব্যাপারী বলেন, ‘আমার ছেলেদের সঙ্গে রুবেল মাদবর ও তার দুই ভাই অকারণে শত্রুতা করছে। তারা বিভিন্ন ব্যবসায় বাধা দিচ্ছে, চাঁদা চাইছে। প্রতিবাদ করলেই মারধর করে। আমি এর বিচার চাই।’
বিল্লাল ব্যাপারী বলেন, ‘রুবেল মাদবরদের পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের নেতা। তারা রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থেকে আমাদের কাছে চাঁদা চাইছে। প্রতিবাদ করেছি, দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে মারধর করা হয়েছে। জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’
বিল্লাল ব্যাপারীর কাছে চাঁদা দাবি ও তাঁকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডামুড্যা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাচ্চু মাদবর বলেন, ‘সব মিথ্যা ঘটনা। আমার নির্বাচনে বিরোধিতা করেছিল। এ কারণে একটু মনোমালিন্য আছে। কিন্তু চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনাটি সম্পূণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
মেহেদী হাসান রুবেল বলেন, ‘নানা বিষয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব আছে। কোনো তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করে মামলা করেছেন।’
জানতে চাইলে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শরিফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কাছে চাঁদা চাইছে, এমন ঘটনার অভিযোগ পাইনি। তাঁকে হুমকি দেওয়ার একটি অভিযোগ করেছিলেন। তদন্তের অনুমতি চেয়ে সেটি আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে আদালতে দুই পক্ষের দুটি চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে, এমন খবর জেনেছি। ঘটনাগুলো তদন্ত করা হবে।’