সিলেটে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা–ভাঙচুরের ঘটনায় আরেক মামলা, আসামি ৮০০

মামলা
প্রতীকী ছবি

সিলেটে ডমিনোজ পিৎজা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। ডমিনোজ পিৎজার শাখা ব্যবস্থাপক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে মীরবক্সটুলা এলাকার রয়্যাল মার্ক হোটেলের ব্যবস্থাপক আবদুল মতিন সরকার তাঁদের হোটেল ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আজ ৩ জন ও গতকাল ১৮ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া বাটা শোরুম ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটে বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে নগরের ১৩টি দোকান-রেস্তোরাঁ, সুপারশপ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে লুটপাটও চালানো হয়। গত সোমবার বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এসব হামলা ও লুটপাট চলে। ১৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে নগরের বিভিন্ন এলাকার আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে বিচ্ছিন্নভাবে লুটপাট চালানোর অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে জানান, আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নতুন করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে গতকাল ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের রয়্যাল মার্ক হোটেলে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর মধ্যে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আজ আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

এদিকে পুলিশের তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কাজ করছে। কিছু ব্যক্তিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছে এবং চিহ্নিত অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত সাত থেকে আটজনকে সরাসরি ভাঙচুরে অংশ নিতে ফুটেজে দেখা গেছে। এ ছাড়া ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পেরেছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

একই সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পুলিশ এখন পর্যন্ত খোঁজে পায়নি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পথচারী, সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক, রাজমিস্ত্রি, ঢালাইমিস্ত্রি, রেস্টুরেন্টকর্মী, ডাব বিক্রেতার সহযোগী, ভবঘুরে ও অতি উৎসাহী উচ্ছৃঙ্খল তরুণ ও যুবক। তবে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কাদের নেতৃত্বে কিংবা ইন্ধনে দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এদিকে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ থেকে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আজ এক ঘণ্টা নিজেদের দোকান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন নগরের হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজায় চলা ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানানো হয়। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বন্দরবাজার এলাকায় মার্কেটটি বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেন। এতে কয়েক শ মানুষ অংশ নেন।