লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫

নিহত মো. সাইজুদ্দিন দেওয়ান
ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. সাইজুদ্দিন দেওয়ান (৪৫) নামের এক প্রবাসী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মধ্যচর বংশী বেড়িবাঁধ, বাবুরহাট ও খাসেরহাটে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত সাইজুদ্দিনের বাড়ি উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চর গাসিয়া গ্রামে। তিনি ইউরোপের দেশ স্পেনে থাকতেন। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। সাইজুদ্দিন বংশী বেড়িবাঁধ এলাকার সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অরূপ পাল প্রথম আলোকে বলেন, সাইজুদ্দিনের পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. ফারুক কবিরাজ এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সদস্যসচিব জি এম শামীম। এর আগেও এই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বিকেলে বিএনপির ওই দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট ও বাবুরহাটে সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষ চলাকালে ৮টি বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে ঢাকায় এবং দুজনকে লক্ষ্মীপুর সদরে পাঠানো হয়। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে গুরুতর জখম সাইজুদ্দিন দেওয়ান মারা যান।

সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চরবংশী ইউনিয়নে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রায়পুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ সালাহ আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। দুপক্ষের সংঘর্ষে আগে তাঁদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে রাতে বিষয়টি সমঝোতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপরও দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। দলের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।