সরকার গদি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে বাজি ধরেছে: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে বাজি ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এবার রাতে নয়, দিনের বেলায় ভোট ডাকাতির আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এই কারণে তারা আরপিও সংশোধন করেছে, যাতে ভোট ডাকাতি জায়েজ হয়। সরকার নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে বাজি ধরেছে। প্রধানমন্ত্রী আবার যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। অন্যদের নিষেধ করে নিজেই আটলান্টিক পাড়ি দিচ্ছেন। এই মুহূর্তে এত বেশি বিদেশ সফর কতটা দেশের পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থে আর কতটা নিজের গদি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, তা মানুষ বুঝে গেছে।

গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে ও মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদের সঞ্চালনায় সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি ধীমান সাহা, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সাবেক সভাপতি অমল আকাশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক ও পরিচালককে ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু নিপীড়নমূলক হলেও মানুষের শেষ ভরসা থাকে আদালত। এই সরকার পুরো আদালতকে বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার করে রেখেছে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে বলা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর বর্তমান শাসনব্যবস্থা একটা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় রূপ নিয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে সার্বিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা পরিবর্তন করে আমরা ৩১ দফা কর্মসূচিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাব করেছি। এ ব্যবস্থার পরিবর্তন না হলে হয়তো নির্বাচন হবে, কিন্তু মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।’

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশে জনগণ ভোটাধিকার হারিয়েছে। জনবিরোধী এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায়। জনগণ ভোট দিতে পারলে হাতে গোনা কয়েকটা ছাড়া অধিকাংশ আসনে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এটা তারাও জানে। বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামোয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশের ৩৯টি রাজনৈতিক দল ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক অবস্থা ফেরাতে এক দফার ওপর গণ-অভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছে। এ দাবি মেনে নিলে কোনো সংঘাতের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সরকার এতে কর্ণপাত না করে আবার পাতানো ও একদলীয় নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে যে হতে পারে না, ২০১৪ ও ১৮ সালে তা প্রমাণিত হয়েছে।