আওয়ামী লীগ নেতার হলফনামায় লেখা ‘জাতীয় পার্টির প্রার্থী হতে ইচ্ছুক’

শামিম আহমদ চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) এবার দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমদ চৌধুরী। কিন্তু তিনি নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ জন্য তিনি নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের মধ্যে ১ শতাংশ ভোটারদের সমর্থনসহ তালিকাও মনোনয়নপত্রের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের জমা দিয়েছেন। তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে।

কিন্তু গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর হলফনামার একটি কপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, হলফনামার প্রথম পাতায় নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা ও নির্বাচনী এলাকার নম্বর ও নামের পরই রয়েছে শপথ অংশ। ওই স্থানে শপথে লেখা ‘নির্বাচনী এলাকা হইতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরূপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে ইচ্ছুক’।

হলফনামার বিষয়ে কথা বলতে শামিম আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘নির্বাচনী এলাকা হইতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরূপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে ইচ্ছুক’ কথাটি লেখেননি বলে জানান। ভুলে এটি হয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সঠিকভাবে মনোনয়নপত্র দিয়েছি। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। আমি জাতীয় পার্টির কথা লিখতে যাব কেন। এটা আমার বিরোধীরা এডিট করে ফেসবুকে প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’

অবশ্য নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা শামিম আহমদ চৌধুরীর হলফনামার শপথ অংশে ‘নির্বাচনী এলাকা হইতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরূপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে ইচ্ছুক’ লেখাটি রয়েছে। উল্লেখ্য, যেকোনো প্রার্থীর হলফনামার এই অংশে সাধারণত ‘নির্বাচনী এলাকা হইতে প্রার্থীরূপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে ইচ্ছুক’ লেখা হয়ে থাকে।

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে এবারও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি এ আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। শামিম আহমদ চৌধুরী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বড় ভাই আবুল কালাম চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ছাতক পৌরসভার টানা তিনবারের মেয়র। গত নির্বাচনে শামিম আহমদ চৌধুরী এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও শামিম আহমদ চৌধুরীর পরিবারের রাজনৈতিক বিরোধ বহু পুরোনো। এখানে আওয়ামী লীগের বিভক্তি এ দুই পরিবারকে ঘিরেই।