রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণে কোনো অসংগতি চোখে পড়েনি। তবে ব্যবস্থাপনায় কিছু ত্রুটি ছিল।
ভোট গ্রহণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন রাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম। রাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৯ সদস্যের এই কমিটি গঠন করেছিলেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব৷
সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় কমিটির সদস্য সাবেক অধ্যাপক মো. শফিকুল আলম ও সৈয়দ জাবিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। কমিটির সদস্যরা দিনভর রাকসু নির্বাচনের কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা, প্রার্থীদের এজেন্ট এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি, ভোট গ্রহণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছি৷ এ সম্পর্কিত একটা লিখিত প্রতিবেদন আমরা রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠিয়েছি। সার্বিকভাবে বলা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে।’
সব মিলিয়ে নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলো—এই প্রশ্নে পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি বলেন, ‘কয়েকটা হলে ভোটার বেশি ছিল। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা হয়নি। ফলে লম্বা লাইন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগে থেকে জায়গা বা স্থান নির্ধারণ করা উচিত ছিল। এটা ত্রুটিপূর্ণ মনে হয়েছে। কিন্তু ভোট গ্রহণের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। আমাদের পর্যবেক্ষণে ভোট গ্রহণে কোনো অসংগতি চোখে পড়েনি৷ তবে ব্যবস্থাপনায় কিছু ত্রুটি ছিল৷ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
শহীদুল্লাহ কলাভবনে এক ঘণ্টা ভোট বন্ধ থাকার বিষয়ে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবিরের অভিযোগের বিষয়ে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমরা পাইনি। ভোটার ও এজেন্টদের প্রশ্ন করেছি৷ তাঁরা কোনো অভিযোগ করেননি। তাঁরা মনে করেন, ভোট ভালোভাবেই হয়েছে।’
রাকসু নির্বাচনে ‘লাইন জ্যামিংয়ের’ অভিযোগ প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মন্নুজান এবং বিজয় ২৪ হলসহ কয়েকটা হলের ভোটারসংখ্যা বেশি থাকা সত্ত্বেও জায়গার সংকুলান না হওয়ায় লম্বা লাইন ছিল। এটা একটা ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি ছিল।’
এক প্রশ্নের জবাবে পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করতে একসঙ্গে সব কেন্দ্রে যেতে পারিনি। একটা একটা করে কেন্দ্রে গিয়েছি। প্রতিটি কেন্দ্রে সব দলের এজেন্ট ছিল৷ জিজ্ঞেস করলেও ভোটের বিষয়ে তাঁরা কোনো অভিযোগ করেননি। কেউ জাল ভোটের অভিযোগও করেনি।’
ভুয়া সাংবাদিক কার্ড বানিয়ে এবং টি-শার্ট পরিয়ে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ করানোর অভিযোগ নিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘ফেসবুকে দেখেছি, সরাসরি কেউ এ ধরনের অভিযোগ করেননি৷’
ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এখন আমি কাউকেই চিনি না। কে বহিরাগত, বর্তমানে আমার পক্ষে চেনা সম্ভব নয়।’