গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে যা ভাবছেন তরুণ ভোটাররা

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পোস্টার
প্রথম আলো ফাইল ছবি

গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হামিম শেখের সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রত্যাশার শেষ নেই। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে দলীয় প্রতীক খুব একটা বিবেচ্য বিষয় নয়। বিষয় হচ্ছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা। এমন একজন প্রার্থী চাই, যিনি তরুণদের নিয়ে ভাববেন।’ একই প্রত্যাশার কথা জানালেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গাজীপুর মহানগরীর বাসিন্দা তৈয়বুর রহমান।

আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়েছিল সাবেক দুটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে। এর আয়তন ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার। গত সিটি নির্বাচনের আগে এখানকার ভোটার–সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৮ হাজার ২০৪, এবার তা বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬। নতুন ভোটার হয়েছেন ৪১ হাজার ২৭২ জন। মোট ভোটারের এই সংখ্যার বিশাল একটি অংশ তরুণ ভোটার। তাই নির্বাচনে তরুণদের ভোট একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

গাজীপুর সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সালনা দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তিনি এবারই প্রথম ভোটার হয়েছেন। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রতীক দেখে নয়, প্রার্থীর যোগ্যতা দেখে ভোট দেবেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু তরুণী, তাই যাঁরা তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন, তাঁদেরই ভোট দেব।’

তরুণ ভোটারদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন মেয়র পদপ্রার্থীরা। তাঁরা সবাই নির্বাচিত হলে তরুণদের জন্য কাজ করার আশ্বাস দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনে তরুণেরা অবশ্যই একটি ফ্যাক্টর। আমার অনেক কর্মী আছে, যারা বয়সে তরুণ। এ ছাড়া নতুন ভোটারদের একটি বড় অংশ তরুণ। তাই তরুণদের প্রাধান্য দিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের প্রধান সমন্বয়কারী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, আমাদের মা–ছেলের বেশির ভাগ কর্মী তরুণ। তরুণেরাই আমাদের শক্তি।’

আরেক মেয়র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম বলেন, ‘আমি নিজেও বয়সে তরুণ। তরুণদের ভাবনাটা আমি খুব ভালো করেই বুঝি। তাই নির্বাচিত হলে আমি তরুণদের প্রাধান্য দিয়েই কাজ করব।’

ঢাকার উত্তরায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা। তিনি গাজীপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। নির্বাচন নিয়ে নিজের ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গাজীপুর একটি ময়লা-আবর্জনার শহর। যেখানে–সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। বৃষ্টি এলেই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সময়ের সঙ্গে মানুষের রুচিবোধও বদলে যাচ্ছে। যিনি এসব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন, তাঁকেই তিনি ভোট দেবেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গাজীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার শিশির প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর সিটিতে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় প্রায় ৪১ হাজার নতুন ভোটার রয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ। তাঁরা রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে সাধারণ ভোটার ও ভাসমান ভোটারদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সচেতন। অতীতে যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, এমন প্রার্থীকে তাঁরা ভোট দেবেন না। একই সঙ্গে তাঁরা নতুন নেতৃত্বের বিকাশ হোক, সেই প্রত্যাশাও করছেন।