নান্দাইলে বিএনপির ১১১ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের

প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বিএনপির ১১১ জন নেতা–কর্মীর নামে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ওই মামলায় বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে গোপনীয়ভাবে সরকারকে উৎখাত ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে মামলাটি দায়ের করেছেন নান্দাইল মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসানুর রহমান। আজ রোববার সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ রাশেদুজ্জামান প্রথম আলোর কাছে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে থানা-পুলিশের একটি দল নান্দাইল পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় তারা খবর পায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েকটি পিকআপে (ছোট ট্রাক) করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হয়েছে। খবর পেয়ে টহল দলটি ঘটনাস্থলে গেলে দুষ্কৃতকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ৯ জনকে আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে লাল স্কচটেপ মোড়ানো অবিস্ফোরিত ককটেলসদৃশ বস্তু, বাঁশের লাঠি, দুটি রামদাসহ আরও কিছু আলামত উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার আসামি যুবদল নেতা মিজানুর রহমান ওরফে লিটন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত শুক্রবার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর হাউসে দোয়া মাহফিল ও ঘরোয়া আলোচনা সভার আয়োজন করেন জেলা বিএনপির সদস্য ইয়াসের খান চৌধুরী। সেই সভাটি তিনি সঞ্চালনা করেছিলেন। আয়োজনস্থল ছিল সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। পুলিশের দাবি করা ঘটনাস্থলে তিনি কীভাবে উপস্থিত ছিলেন, তা বুঝতে পারছেন না। মিজানুরের দাবি, তিনি বিএনপি করেন বলেই তাঁকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

নান্দাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল কাদির জানান, মামলায় উল্লেখ করা সময়ে তিনি ময়মনসিংহে ছিলেন। তাঁকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে শুনে বিস্মিত হয়েছেন। এনামুলের দাবি, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের এলাকাছাড়া করার চেষ্টা করছে এই সরকার।

বিএনপির আরও কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলায় বিএনপি চারটি গ্রুপে বিভক্ত। সেখানে দলের নানা কর্মসূচিও আলাদা করে পালন করা হয়ে থাকে। নেতা–কর্মীরা একে অপরের কর্মসূচিতে যান না। তবে পুলিশের দায়ের করা মামলাটিতে একাধিক গ্রুপের নেতাদের বিরুদ্ধে একই ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিয়ে বিএনপির সেখানকার নেতা–কর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে বাদী এসআই হাসানুর রহমান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আপনি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।’ পরে ওসি মোহম্মদ রাশেদুজ্জামানের মুঠোফোনে কল করা হলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঘটনার দিন একটি পিকআপ ভ্যানে চড়ে অনেক নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন। তারা কে কোন গ্রুপের সেটি পুলিশের চেনার কথা না। পুলিশ ঘটনাস্থলে যা পেয়েছে তাই তদন্ত করে মামলা দায়ের করেছে।