ইতিহাস ছুঁয়ে দেখতে কাপাসিয়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্ৰামে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তোলাছবি: সাদিক মৃধা

ইতিহাসের পাতায় গল্প আছে, রানি ভবানী বানিয়া রাজাদের শেষ বংশধর ছিলেন। তাঁর দরদরিয়া দুর্গ ছিল গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামে, বানার নদের পারে। দুই দশক আগেও সেখানে দুর্গের ধ্বংসাবশেষ ভালোভাবে দৃশ্যমান ছিল। ক্রমান্বয়ে দৃশ্যমান ধ্বংসাবশেষ সব বিলীন হয়ে যায়।

দরদরিয়া দুর্গের ইতিহাসের গল্পগুলো মানুষের মুখে মুখে। তবে সেই ইতিহাসের অস্তিত্ব ছুঁয়ে দেখতে এবার সেখানে শুরু হয়েছে বড় পরিসরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান খননকাজ শুরু করেছেন। তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী। সামনে আরও অনেকেই এই কাজে যুক্ত হবেন। নিজস্ব অর্থায়নে এই খননকাজ শুরু করেছেন সুফি মোস্তাফিজুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে খননকাজ দেখতে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন (রিমি)। তিনি খননকাজের খবরে ভিড় জমানো স্থানীয় বাসিন্দাদের খননকাজের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনার বিষয়ে বলেন।

গত ২৪ এপ্রিল ‘দরদরিয়া দুর্গে দৃশ্যমান কোনো কিছু আর নেই’ শিরোনামে একটি সচিত্র সংবাদ ছাপা হয়। তখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে খননকাজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে বললেও তার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংবাদ প্রকাশের আট মাসের মাথায় অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান এ কাজের উদ্যোগ নেন।

সকালে খননের স্থানে গিয়ে দেখা যায়, নিভৃত পল্লির নির্জন একটি এলাকায় উৎসুক মানুষের ভিড়। নির্দিষ্ট একটি স্থানকে চিহ্নিত করে দড়ি দিয়ে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। বেষ্টনীর আওতায় থাকা চিহ্নিত স্থানে সতর্কতার সঙ্গে খননকাজ করছেন কয়েকজন কর্মী। পাশেই সদ্য কেটে নেওয়া ধানখেতে অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে।

দরদরিয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘বাপ–দাদার কাছ থেকে আমরা এই এলাকার ইতিহাসের রানি ভবানীর দুর্গের গল্প শুনেছি। নতুন করে এই উদ্যোগে হয়তো আরও নতুন অনেক তথ্য জানতে পারব।’

অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আপাতত নিজ অর্থায়নে খননকাজ শুরু করেছি। ছয় মাস আগে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অর্থায়নের জন্য আবেদন করেছি। এখনো সাড়া পাইনি। হয়তো তারা অর্থায়ন করবে। কারণ, এ ধরনের খননকাজ নিজস্ব অর্থায়নে করা খুবই কঠিন।’