কাঁঠালের ভাস্কর্য দেখতে মানুষের ভিড় 

কাঁঠালের ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অভ্যন্তরে।

কাঁঠালের ভাস্কর্য দেখতে এসে ছবি তুলে রাখছেন দর্শনার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কাশিমপুরে বিএডিসিতে
ছবি: প্রথম আলো

১ ফুট বা ২ ফুট নয়, ২১ ফুট লম্বা ও ৯ ফুট প্রশস্ত বিশাল আকৃতির কাঁঠালের একটি ভাস্কর্য রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। এটি এত নিখুঁতভাবে করা হয়েছে যে দূর থেকে বোঝার উপায় নেই, এটি ভাস্কর্য। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী কাঁঠালের ভাস্কর্যটি দেখতে সেখানে ভিড় করছেন। ভাস্কর্য দেখতে এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের চারাগাছ।

কাঁঠালের ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অভ্যন্তরে।

বিএডিসির কর্মকর্তারা জানান, ‘কাঁঠাল আমাদের দেশের জাতীয় ফল। ফলটি বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। কাঁঠাল ইউরোপে মাংসের বিকল্প হিসেবে খাওয়া হচ্ছে। দিন দিন ইউরোপে কাঁঠালের চাহিদা বাড়ছে। গুণগত মানেও সেরা ও সুমিষ্ট ফল হিসেবে দেশের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরেও এ ফল রপ্তানি করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কৃষকদের মধ্যে উৎপাদন বৃদ্ধির উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়ানোর জন্যই মূলত কাশিমপুরে বিএডিসি অভ্যন্তরে কাঁঠালের ভাস্কর্যটি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত ১৫ জানুয়ারি বিএডিসির অভ্যন্তরে কাঁঠালের ভাস্কর্যটি তৈরির কাজ শুরু হয়। এটির কাজ শেষ হয় ২১ ফেব্রুয়ারি। এক মাসের কিছু বেশি সময়ে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর সাধারণ মানুষের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়। এখন প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভাস্কর্যটি দেখতে ভিড় করছেন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কাঁঠালের ভাস্কর্য দেখতে আসেন একটি কারখানার কর্মী জেসমিন আক্তার। তিনি বলেন, এখানে কাঁঠালের বড় একটি ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে, এমন খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। তাঁর মতো আরও অনেকেই ভাস্কর্যটি দেখতে ভিড় করছেন। 

বিএডিসির উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রে যুগ্ম পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গাজীপুরে প্রচুর কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। আমরা জাতীয় ফলের প্রতি মানুষের উৎসাহ সৃষ্টির জন্য ভাস্কর্যটি তৈরি করেছি। এটি দেখতে দর্শনার্থীরা আসছেন।  পাশাপাশি কাঁঠালের চারারও বিক্রি বেড়েছে। তাঁরা ভাস্কর্য দেখা শেষে কাঁঠালের বিভিন্ন জাত সংগ্রহ করছেন।’

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (উদ্যান) মো. ইসবাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাঁঠাল গাজীপুরে বেশ প্রসিদ্ধ। এই কাঁঠাল কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের মধ্য দিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহার যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব হবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই কাঁঠালের ভাস্কর্য দেখে দেশের মানুষ কাঁঠালের গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ হবে। এতে উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।’