মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন বিজিবি মহাপরিচালক

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারে দেশটির স্বাধীনতাকর্মী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে সেনাবাহিনীর কয়েক দিন ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ এখন আতঙ্কে আছেন। এ অবস্থায় আজ সোমবার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সোমবার বিজিবির মহাপরিচালক নিয়মিত অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি তিনি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিজিবি রামু সেক্টরের অধীন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের হোয়াইক্ষ্যং বিওপি এবং কক্সবাজার-৩৪ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন বাইশফাঁড়ি, তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের খোঁজখবর নেন। এ সময় তিনি সবাইকে সীমান্তে সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির সফল বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন বিজিবি মহাপরিচালক।

তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক

প্রশাসনিক সূত্র জানা যায়, ১৩ নভেম্বর থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় এপারের বাজারপাড়া, বাইশফাঁড়ি, তুমব্রু রাইটসহ সাতটি গ্রামের মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। গত বছরও ওপারে মর্টারশেল ও গোলা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছিল। গতকাল রাতেও মর্টারশেলের বিকট শব্দে এলাকায় কম্পন দেখা দেয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। তবে সতর্কাবস্থায় আছে বিজিবি।

সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সমন্বয়কারীর কার্যালয় (ইউএনওসিএইচএ) এক বিবৃতিতে বলে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের ২৬ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এক বছর আগের অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি ১৩ নভেম্বর ভেঙে যাওয়ার পর ১১ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে। মিয়ানমার বাহিনীর হাতে শতাধিক লোক আটক এবং আরাকান আর্মির হাতে পাঁচজন জিম্মি রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।