অভূতপূর্ব সাফল্যেও আমরা সন্তুষ্ট নই: পরিকল্পনামন্ত্রী

বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস-২০২২ উপলক্ষে সাভারে পক্ষঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) রেডওয়ে হলে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

সারা বিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করলেও এতে আত্মতুষ্টির কিছু দেখছেন না পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য বিশ্বের সবাই স্বীকার করে। তবে আমরা সন্তুষ্ট নই। এখনো দেশে প্রায় শতকরা ২০ ভাগ মানুষ নিরক্ষর রয়েছে। শতকরা ২০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে। এখনো আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারি না এই ভেবে যে কাল রাতে খাবারের নিশ্চয়তা আছে? আমাদের হতাশ হলে চলবে না। আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’

বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস-২০২২ উপলক্ষে সাভারে পক্ষঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন দুটি জিনিসের। এক পরিশ্রম ও কাজ আর কাজ। দ্বিতীয় প্রয়োজন সামাজিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি। ক্ষুধার বিরুদ্ধে, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে, সবকিছুর বিরুদ্ধে আমাদের প্রয়োজন পরিশ্রমের। পরিশ্রমের জন্য প্রয়োজন পরিবেশের।’

‘অস্টিও-আর্থ্রাইটিস চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি’ স্লোগানকে ধারণ করে দিবসটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় প্রতিষ্ঠানের চত্বর থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিমুলতলা এলাকা ঘুরে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে সিআরপির রেডওয়ে হলে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে হয় আলোচনা সভা।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশনস ইনস্টিটিউটের (বিএইচপিআই) অধ্যক্ষ ওমর আলী সরকার, বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফিজিওথেরাপি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

ফিজিওথেরাপির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছিলেন, আহত হয়েছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁদের ফিজিওথেরাপি ও বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠিয়েছিলেন। আমাদের অজ্ঞতার কারণে এ চিকিৎসাব্যবস্থা খুব বেশি বিস্তার লাভ করতে পারেনি। আমরা বিশ্বাস করে ফেলি, অপারেশন বা ওষুধ খেলেই আমরা সব রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাব। তবে এর বাইরে এমন কিছু রোগের চিকিৎসা রয়েছে, যেগুলো ফিজিওথেরাপি ছাড়া চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা খুব কঠিন।’

সবার সম্মিলিত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সিআরপি আজ বিশ্বদরবারে জায়গা করে নিয়েছে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, সবার অনুদানের মধ্য দিয়ে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটিতে শুধু অসহায় রোগীদের চিকিৎসাই দেওয়া হয় না, তাঁদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও নেওয়া হয় নানা উদ্যোগ।

অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিল মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ, রবি, বিকাশ; ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন; ইবনে সিনা; নেস্‌লে বাংলাদেশ লিমিটেড ও রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড।