গাজীপুরে মহাসড়কে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ, কারখানায় ছুটি

ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের নাওজোড় এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এ সময় বিজিবি ও র‍্যাবের সদস্যরা শ্রমিকদের সরিয়ে দেয়ছবি : সাজিদ হোসেন

গাজীপুরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক দিনের শ্রমিক আন্দোলনের জেরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, জরুন, চান্দনা ও ভোগরা এলাকায় ৫০টির বেশি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুরের নাওজোড় এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
ছবি : সাজিদ হোসেন

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শিল্প ও থানা-পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এর কিছু সময় পর নাওজোড় এলাকায় শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় শ্রমিকেরা মহাসড়কে টায়ার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে তখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

গাজীপুরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে
ছবি: সাজিদ হোসেন

পুলিশ বলছে, গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে গাজীপুরের চান্দনা ও নাওজোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর করেন শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে তাঁরা নাওজোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তার ওপর কাঠ ও বাঁশ ফেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বাসন থানার পুলিশ, র‍্যাব ও শিল্প পুলিশ। তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি  ধাওয়া হয়। এ সময় শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট মহাসড়কে ধরিয়ে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া নাওজোড় থেকে ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকায় সড়কে শ্রমিকেরা বিভিন্ন কারখানায় ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর করে।

সকালে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে কোনাবাড়ী জরুন, চান্দনা ও ভোগরা এলাকার অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

বেতন বাড়ানোর দাবিতে হওয়া বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত নারী শ্রমিকের কারখানা ইসলাম গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানার ফটকে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গাজীপুরের কোনাবাড়ি
ছবি: সাজিদ হোসেন

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ বলেন, সকালে চান্দনা এলাকায় একটি কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে নাওজোড়সহ আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা ভাঙচুর করেন। আগুন ধরিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন।

বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে আছে বিজিবি
ছবি: সাজিদ হোসেন