ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে জমজমাট খালেকের হাতপাখার ব্যবসা

‘গরমের সঙ্গী হাতপাখা’ বলতে বলতে তালপাতায় বানানো হাতপাখা বিক্রি করছেন আবদুল খালেক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রথম তিন দিন ধরে তিনি ক্যাম্পাসেই আছেন। তিন দিনে তিনি ১ হাজার ২০০–এর বেশি হাতপাখা বিক্রি করেছেন। মানভেদে প্রতিটি পাখার দাম রাখছেন ২০ থেকে ৩০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে খালেকের হাতপাখা কিনছিলেন।

আবদুল খালেকের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলায়। হাতপাখা বিক্রি করে ছয় মাস সংসার চালান তিনি। বাকি ছয় মাস সংসার চালান নাটোরের কাঁচাগোল্লা বিক্রি করে।

খালেক ঢাকার সাভার, নবীনগর এলাকায় ঘুরে ঘুরে হাতপাখা বিক্রি করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে এখানে এসেছেন। গরমের কারণে এখানে তাঁর বেচাবিক্রি অনেক ভালো হয়েছে।

বুধবার আবদুল খালেকের সঙ্গে দেখা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে। হাতপাখা বিক্রি নিয়ে খুব ব্যস্ত ছিলেন তিনি। কথায় কথায় তিনি বলেন, তিনি বগুড়া থেকে তালপাতার হাতপাখা সংগ্রহ করেন। তাঁর এলাকা নাটোরের লালপুর থেকেও সংগ্রহ করেন। এই পাখা সংগ্রহ করে তিনি পাখার ওপর নানা ধরনের রং লাগান।

রাজশাহীতে কয়েক দিন ধরে মৃদু দাবদাহ বইছে। মঙ্গলবার থেকে তা মাঝারি তাপপ্রবাহে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়—৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপমাত্রার রেকর্ড এমন হলেও তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে আরও বেশি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে সাড়ে তিন লাখ মানুষ রাজশাহীতে গেছেন। খালেকের কাছ থেকে হাতপাখা কিনে আলিম হোসেন নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার বাড়ি সিলেটে। শুনেছিলাম রাজশাহীতে তাপমাত্রা বেশি থাকে। আজকে তার প্রমাণ পেলাম। গরম থেকে স্বস্তি পেতে তাই হাতপাখা কিনেছি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগের হাতে হাতপাখা। হাতপাখা নাড়িয়ে বাতাস করছিলেন ঢাকা থেকে আসা অভিভাবক নাসরিন আক্তার। বলেন, রাজশাহীতে দুই দিন ধরে আছেন। প্রচণ্ড গরমে তাঁর গলাব্যথা হয়ে গেছে। ৩০ টাকা দিয়ে হাতপাখা কিনে বাতাস করছেন।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা এস এম রেজওয়ানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, রাজশাহীতে কয়েক দিন মৃদু তাপপ্রবাহ চলার পর দুই দিন ধরে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। এটি অব্যাহত থাকবে। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।