এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও ভবনের মালিক বা নির্মাণশ্রমিকদের কাউকে আটক করেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে ওই শিশু তার মায়ের সঙ্গে স্কুল থেকে বাবার ওষুধের দোকানের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ওপর থেকে গাঁথুনি করা কয়েকটি ইট খসে পড়ে তাদের মাথায়। প্রথমে মেয়েটির মা মাটিতে পড়ে যান। এরপর শিশুটিও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে শিশুটিকে পাঠানো হয় যশোর জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শ্রেয়ার মৃত্যু হয়। শ্রেয়ার মা বুলি বালাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নেওয়া হয়।

নিহত শিশুটির মা বুলি বালা বলেন, ‘আমাদের বিয়ের ১৪ বছর পর অনেক সাধনার পর শ্রেয়ার জন্ম হয়। ওকে আমি প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যেতাম। শনিবার প্রাইভেট শেষ করেই শ্রেয়াকে নিয়ে তাঁর বাবার দোকানে যাই। দোকান বন্ধ দেখে কিছুক্ষণের জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে থাকি। এ সময় ওপর থেকে হঠাৎ করে কয়েকটি ইট পড়লে আমি নিজে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ি। স্থানীয় লোকেরা আমাকে উদ্ধার করতেই দেখি আমার মেয়ে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এখন আমরা কী নিয়ে বাঁচব?’

ঘটনার পরপরই চৌগাছা থানা-পুলিশের একটি দল ও চৌগাছা পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবন নির্মাণের সময়ে যে ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকার কথা, তার কোনোটিই ওই ভবন নির্মাণে মানা হচ্ছে না। ভবনের মালিকের অবহেলায় ওপর থেকে ইট পড়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এটা ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়ে। এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। শিশুর পরিবার ও স্বজনেরা লাশের সৎকার করা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। মামলা দিলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।