বড় বড় গর্ত, দুর্ভোগ

ইসলামপুর থেকে মালনীর মোড় পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়কে অন্তত ১২টি বড় গর্ত। দেখে মনে হবে ছোটখাটো পুকুর।

সড়কে বড় বড় খানাখন্দ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা। গত রোববার নেত্রকোনার ইসলামপুর মোড় এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

সড়কে খানাখন্দ। কোথাও পিচঢালাই আছে, কোথাও নেই। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার সড়কটি। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। তাতে প্রায় প্রতিদিন উল্টে পড়ছে যানবাহন। আহত হচ্ছে যাত্রীরা। কাদাপানিতে ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে। এমন দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

এ চিত্র নেত্রকোনা-আটপাড়া সড়কের ইসলামপুর মোড় থেকে মালনী মোড় পর্যন্ত আধা কিলোমিটার অংশের। স্থানীয় ব্যক্তিরা সড়কটি সংস্কারের বারবার দাবি জানালেও তা হচ্ছে না।

এ সড়ক পৌরসভা এলাকার মধ্যে পড়লেও তা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিভাগের অধীনে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটির অবস্থা এখন নাজুক।

গত রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের ইসলামপুর মোড় থেকে সড়কটি শুরু। কিন্তু সেখান থেকেই সড়কজুড়ে খানাখন্দ ও গর্ত। বেরিয়ে পড়েছে ইটের খোয়া ও বালু-পাথর। সেখানে জমে আছে পানি।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আগে সড়কটি ভাঙাচোরা হলেও অতটা মন্দ ছিল না। চলতি বর্ষায় খানাখন্দগুলো বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। ইসলামপুর থেকে মালনীর মোড় পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়কে অন্তত ১২টি বড় গর্ত। দেখে মনে হবে যেন ছোটখাটো পুকুর। একেকটি গর্ত ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত গভীর। ফলে যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে। কখনো সিএনজি, ইজিবাইক, রিকশা, লরি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান উল্টে যাচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, আটপাড়া উপজেলা ছাড়াও নেত্রকোনা সদর উপজেলার আমতলা ইউনিয়ন ও নেত্রকোনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের শহরে যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। এ ছাড়া সড়কটির পাশেই রয়েছে বেসরকারি সংস্থা স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির প্রধান কার্যালয়, স্বাবলম্বী পরিচালিত একটি হাসপাতাল, তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করে।

ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলেন, সড়কটি খারাপ থাকায় শহরের কোনো রিকশাচালক সহজে আসতে চান না। কোনো মালামাল আনা-নেওয়া করা সম্ভব হয় না।

ইজিবাইকচালক রফিক মিয়া বলেন, ‘আগেও এ সড়কে চলাচলে সমস্যা হতো। কিন্তু বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ। অল্প বৃষ্টিতেই সেই সব গর্তসহ সড়কে পানি জমে যায়। ফলে কোনটা ছোট গর্ত আর কোথায় বড় গর্ত, তা বোঝার উপায় থাকে না। গত শনিবার বিকেলেও গাড়ি নিয়ে গর্তে উল্টে যাই। আমিসহ তিনজন যাত্রী হালকা ব্যথা পেয়েছি। সড়কটি কেউ মেরামত করে না।’

সড়কের পাশে ব্যবসায়ী আলীম মিয়া বলেন, ‘সড়কটিতে পানিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টি না থাকলেও পানি জমে থাকে।’ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবদুল হেলিম বলেন, সড়কের এই দুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এলজিইডিকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।

এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী আল আমিন সরকারের দপ্তরে গত রোববার দুপুরে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম শেখ বলেন, ‘অনেক রাস্তাই এমন খারাপ। মোবাইল মেইনটেন্যান্স টিমের মাধ্যমে রাস্তাগুলো ভালো রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ওই স্থানে কিছু ইট, খোয়া ও বালু ফেলা হবে।’