বাইরে দাঁড়িয়ে ব্যালটে সিল, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বললেন, ‘চোখে পড়েনি’
নোয়াখালীর তিনটি উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে সেনবাগ, সোনাইমুড়ি ও চাটখিল। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পাঁচগাঁও বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, গোপন কক্ষে না গিয়েই ব্যালট বাক্সের কাছে দাঁড়িয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারছেন এক ভোটার।
এ বিষয়ে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, গোপন কক্ষের বাইরে ব্যালটে সিল মারার বিষয়টি তাঁর চোখে পড়েনি।
পাঁচগাঁও বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ৪ হাজার ১৯৭ জন। কেন্দ্রের ১০টি বুথে বেলা ১১টা পর্যন্ত ৩০০টি ভোট পড়েছে বলে জানা যায়।আজ সকাল আটটায় থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও তিন উপজেলার প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারের উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা। ভোট শুরুর প্রথম এক ঘণ্টায় কয়েকটি কেন্দ্র ছিল ভোটারশূন্য। আবার অনেক কেন্দ্রে ভোট পড়েছে একটি–দুটি। তবে বেলা ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিন উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল ১০টার দিকে সেনবাগ উপজেলার ডমনাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারশূন্য কেন্দ্রের সামনের বেঞ্চে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্য। কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ৯৬৪ জন। কেন্দ্রের মোট ছয়টি বুথে প্রথম ঘণ্টায় মোট ভোট পড়েছে মাত্র ৪৬টি।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নাহিদ হাসান সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ভোটারের উপস্থিতি অনেক কম। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা খুবই কম। প্রথম এক ঘণ্টায় এক নম্বর বুথে কোনো ভোট পড়েনি। তবে বেলা বাড়লে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে ধারণা এই কর্মকর্তার।
সেনবাগ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ২ হাজার ৯০৮ জন। সকাল সোয়া নয়টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম সোয়া এক ঘণ্টায় ছয়টি বুথে ভোট পড়েছে ৬৪টি। কেন্দ্রের একটি বড় কক্ষের ভেতর একসঙ্গে চারটি বুথ করায় সেখানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা লক্ষ করা যায়। গোপন কক্ষগুলোও খুব একটা সুরক্ষিত নয়।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, পাশের ভবনের নিচতলার কক্ষগুলোতে অনেকগুলো বেঞ্চ রাখার কারণে সেখানে বুথের ব্যবস্থা করা যায়নি। এ কারণে একটি বড় কক্ষে চারটি বুথ করা হয়েছে। তবে তিনি সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক রয়েছেন।
একই উপজেলার কাদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, দুই ঘণ্টায় সাতটি বুথে ভোট পড়েছে ১৫৩টি। মোট ভোটার ২ হাজার ৫৬২ জন। ওই কেন্দ্রের ৫ নম্বর বুথে প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ছয়টি।
ভোট দিতে আসা ষাটোর্ধ্ব আছিয়া খাতুন বলেন, ভোটারের উপস্থিতি কম থাকায় তিনি কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছেন। একই কথা বলেন আরেক নারী প্রার্থী জেসমিন আক্তারও।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। তবে ভোটারের উপস্থিতি কম।
ভোটারের উপস্থিতির একই চিত্র চোখে পড়ে জেলার সোনাইমুড়ি ও চাটখিল উপজেলার ভোটকেন্দ্রেও। সকাল সাড়ে দশটায় সোনাইমুড়ী উপজেলার সাততলা সিদ্দিকিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারশূন্য কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা অপেক্ষা করছেন। মাঝেমধ্যে হাতে গোনা অল্প কিছু ভোটার আসছেন ভোট দিতে।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. সাইদুল করিম জানান, কেন্দ্রটিতে ভোটার ৩ হাজার ১৯২ জন। প্রথম আড়াই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩১০টি।